জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানোয় দেশে দরিদ্র মানুষ এবং জনজীবনে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে বিএনপি। সোমবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন নেতারা।
মঙ্গলবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এমন তথ্য।
মির্জা ফখরুল বলেন, আইজিডি এবং পিপিআরসি যৌথ জরিপে দেশে করোনাকালে তিন কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। সরকারের উদাসীনতা, অযোগ্যতা ও ভ্রান্তনীতির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
করোনাকালে অপরিকল্পিত বিধিনিষেধ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই দরিদ্রের সংখ্যা আরও বাড়বে।তিনি বলেন, সম্প্রতি সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পাঁচ দফা এলপিজি গ্যাসের দামও বাড়নো হয়েছে। কৃষকসহ জনজীবনে এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বুধবার বিভাগীয় শহরে ও আগামীকাল জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশে করবে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দেশের কয়েকটি জেলায় দুর্গাপূজার মণ্ডপে ও মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় বিরোধীদল বিশেষ করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢালাওভাবে আসামি করে মিথ্যা মামল করা হচ্ছে। চলছে গ্রেফতার ও হয়রানি। অবিলম্বে এ ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
শহীদ নুর হোসেন দিবস উপলক্ষে আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জাতির ওপর চেপে বসা চরম দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে আন্দোলন-সংগ্রামের শপথ নেয়া এবং শহীদ নুর হোসেনের মতো সাহসিকতা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এজন্য নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আজও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে শহীদ নুর হোসেন আমাদের প্রেরণা। তার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরশাসকের তপ্ত বুলেটের শিকার হয়েছিলেন নুর হোসেন। সেদিন তার আত্মত্যাগ এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষকে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অনুপ্রাণিত করেছিল। তার আত্মদানের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালে সংঘটিত হয়েছিল সফল ছাত্র গণঅভ্যুত্থান। পতন হয়েছিল নির্দয় স্বৈরশাসকের, মুক্ত হয়েছিল বহুদলীয় গণতন্ত্র।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নব্বইয়ে অর্জিত গণতন্ত্রের পথচলাকে আবারও বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। সব বাধা দূর করে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই নুর হোসেনের মতো সাহসিকতা নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ