দেশের নির্বাচন যতই দেরিতে হবে, ততই ষড়যন্ত্র বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে আয়োজিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের নির্বাচন যত দেরি হবে, ততই ষড়যন্ত্র বৃদ্ধি পাবে। জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার বিরুদ্ধে দেশের লক্ষকোটি মানুষ এক যুগের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেছে, সেই স্বৈরাচার কিন্তু বসে নেই। সেই স্বৈরাচার তাদের দেশি-বিদেশি প্রভুদের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যত দেরিতে হবে, এই দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুবিধা, এই দেশের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাব্যবস্থা, এই দেশের কৃষকদের সমস্যা, এই দেশের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা, এই দেশের বিচারব্যবস্থার সমস্যা, এই দেশের প্রশাসনের সমস্যা, যতগুলো সমস্যা এই স্বৈরাচার করে গিয়েছে, তা আরও বৃদ্ধি যাবে। একমাত্র একটি নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব ধীরে ধীরে দেশের সমস্যাগুলোর সমাধান করা।’
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে সক্ষম মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে সক্ষম হলেই প্রকৃত ব্যক্তিগুলো নির্বাচিত হয়ে আসতে পারবেন। যারা সত্যিকার অর্থেই জনগণের কথা বলবেন, জনগণের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করবেন। প্রতিটি সেক্টরের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে চিন্তা করবেন। একটি প্রকৃত নির্বাচনের মাধ্যমে যদি প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন, তাহলেই একমাত্র সম্ভব।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশবাসী বিএনপিকে দায়িত্ব দিতে চায়। দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্ব নেওয়ার মতো নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। আগামী দিনে চুয়াডাঙ্গায় কারা নেতৃত্ব দেবেন, সেই নেতা যেমন বাছাই করে নেব, তেমনি আসুন আজ সকলে মিলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, আমরা যে যেই পর্যায়ের নেতা বা কর্মী হয়ে থাকি না কেন, সেটা বড় কথা না। আপনি একজন বিএনপির কর্মী, আপনি একজন শহীদ জিয়ার সৈনিক। তাই সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনাকে বুঝতে হবে আপনার কাছে আপনার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা কী এবং তা অনুধাবন করে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের সংগঠনকে গড়ে তুলতে সম্মেলন যেমন প্রয়োজন, প্রকৃত নেতৃত্ব ও ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে সম্মেলন যেমন প্রয়োজন, একইভাবে বাংলাদেশকে যদি গড়ে তুলতে হয়, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের যদি পরিবর্তন করতে হয়, সেই কাজ যদি শুরু করতে হয়, আবার যদি আমাদের খাল খনন কর্মসূচি শুরু করতে হয়, আবার যদি শিল্পবিপ্লব শুরু করতে হয়, আবার যদি আমাদের কৃষকের সমস্যার সমাধান করতে হয়, অবশ্যই দরকার প্রকৃত জনপ্রতিনিধি। যারা দেশের স্বার্থে কথা বলবে, মানুষের কথা বলবে এবং তার জন্য প্রয়োজন নির্বাচন। এই কথাটা পরিষ্কারভাবে আজকে আমাদের তুলে ধরতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে। তুলে ধরতে হবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে। কারণ, পৃথিবীতে যেসকল গণতান্ত্রিক দেশ আছে, তারা এই গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমেই ধীরে ধীরে তাদের দেশের অনেক সমস্যার সমাধান করেছে।’
সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ