আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছিলেন একজন ঘড়ি লোভী নেতা। বিশ্বের দামি দামি সব ঘড়ি উপহার পেতেই যত লোভ করেছিলেন তিনি। মন্ত্রণালয়ের ঠিকাদারদের কাছ থেকে ঘড়ি উপহার নিয়ে বিনিময়ে দিতেন বড় বড় প্রজেক্টের কাজ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পেশা ছিল লেখক ও সাংবাদিকতা। লেখালেখি থেকে তার আয় ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার আইনজীবী স্ত্রীর আয় ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এক যুগ পরে এসে তার বাৎসরিক আয় দাঁড়ায় ৩৮ লাখ ৭ হাজার ৫০৮ টাকা। পরিবর্তন হয় চালচলন ও পোশাকের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রুচিরও পরিবর্তন হয়েছে। ক্ষমতায় থাকাকালে পরতেন নামিদামি অনেক ব্র্যান্ডের ঘড়ি।
ওবায়দুল কাদেরের হাতে দেখা গেছে, রোলেক্স ডে ডেট প্রেসিডেন্ট ঘড়ি, দাম ২৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা; লুই ভিতন জিএমটি ভয়েজার (পিঙ্ক গোল্ড সংস্করণ), দাম ১২ লাখ ৭২ হাজার টাকা; রোলেক্স ডেটজাস্ট, দাম ৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা; উলিস নাদা এক্সেকিউটিভ ডুয়াল টাইম, দাম ১০ লাখ ১৬ হাজার ২০০ টাকা; রোলেক্স সেলিনি (হোয়াইট গোল্ড), দাম ৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ও রোলেক্স ডেটজাস্ট (ডায়মন্ড ডায়াল), দাম ৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।
এসব ঘড়ির ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, এটা একেবারে ফর গডস সেক, আমি বলছি এগুলো আমার দামি পোশাক, এগুলো আমার কেনা না। আমি পাই, হয়ত আমাকে অনেকে ভালোবাসে, আমার অনেক কর্মী আছে, তারা বিদেশে আছে, আসার সময় স্যুট নিয়ে আসে। সিঙ্গাপুর থেকে একজন তিনটা কটি বানিয়ে নিয়ে এসেছে, এরকম এখন আপনি যদি নিয়ে আসেন, আমাকে উপহার দেন, আমি কি করব? এটা গিফট আইটেম!
অন্যদিকে তার একটি রোলেক্স ডে ডেট ঘড়ির দামই ২৮ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। আবার তার দাখিল করা হলফনামা বা আয়কর সনদে এই দামি হাতঘড়িটির বা অন্য ঘড়িগুলোর কোনো উল্লেখই নেই, যার মাধ্যমে নির্বাচনী বিধিমালা আর আয়কর আইনের লঙ্ঘন করেছিলেন। প্রতিটি নির্বাচনের হলফনামায় লুকিয়ে ছিলেন শখের হাতঘড়িগুলো।
এদিকে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আর কোনো খোঁজ মিলছে না। যিনি প্রতিদিন মিডিয়ার সামনে কথা না বলে থাকতে পারতেন না, তিনিই এখন আত্মগোপনে।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ