ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

নদ-নদী-খাল পুনরুদ্ধার ও নদীর সীমানা নির্ধারণের দাবি জনির

প্রকাশনার সময়: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:৪৩

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের যুগান্তকারী পদক্ষেপ খাল খনন প্রকল্প ও নদী খনন প্রকল্প অব্যাহত থাকলে আজ বাংলাদেশের নদীগুলো সচল থাকতো। তাহলে প্রতিবছর বন্যার তীব্রতা থেকে এ দেশের মানুষ রক্ষা পেতো। আবারো জিয়ার খাল খনন প্রকল্প ও নদী খনন প্রকল্প চালু করার দাবি জানিয়েছেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল লতিফ জনি। একই সাথে গত ৫০ বছর পূর্বের জাতীয় ভূমি নকশা অনুসারে দেশের প্রতিটি নদ-নদী খাল পুনরুদ্ধার ও নদীর সীমানা নির্ধারণ করার দাবি জানান তিনি।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ দাবি জানান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে আবদুল লতিফ জনি বলেন, সম্প্রতি দেশের পূর্বাঞ্চলে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়। এতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দলের প্রতিটি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন প্রতিটি জেলা থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ ও ঔষধ সামগ্রী নিয়ে বন্যায় সহায় সম্বলহীন মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এতে বানভাসী এলাকার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের যে উপকার হয়েছে তাহা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরবাসী আজীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

তিনি বলেন, লাগাতার বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পানি নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কোনো পূর্ব সতর্কীকরণ ছাড়াই সব গেট আকস্মিকভাবে খুলে দেওয়ার কারণে এই নিয়ন্ত্রণহীন এ ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। শুরু হয় মানবিক বিপর্যয়। ফেনী জেলার পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া থানার পুরো এলাকা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১০ থেকে ১৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। সোনাগাজী, দাগুনভূইয়া থানাও ৭ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। গবাদিপশু পানির তীব্র স্রোতে ভেসে চলে যায়। শুরু হয় অমানবিক-অবর্ণনীয় বাসস্থান ও খাদ্যসংকট।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ। নদী বাদ দিয়ে বাংলাদেশকে চিন্তা করা যেমন অসম্ভব তেমনি বাংলাদেশের অনেক নদী অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে মাতৃতুল্য নদী আজ ইতিহাসের ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। মা যেমন সন্তানকে আগলে রাখে, তেমনি নদীও হাজার হাজার বছর ধরে এ দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে একাকার হয়ে মিশে আছে। এই বিবেচনার গুরুত্বকে সামনে রেখে ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষক এবং রণাঙ্গনের ‘জেড’ ফোর্সের সর্বাধিনায়ক মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী বীর, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ফেনী নদীর মোহনায় মুহুরী প্রকল্প এবং ছোট ফেনী নদীর মোহনায় মুছাপুর ব্যারেজ প্রকল্প চালু করেন। এই প্রকল্পগুলো সমুদ্রের নোনা পানির জোয়ারের সময় ফসলের যাতে ক্ষতি না হয় এবং শুকনো মওসুমে মিঠা পানি জমিয়ে রেখে ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। যার ফলে ফেনী, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের অনেক অঞ্চলে ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয় এবং ধান উৎপাদনে এই অঞ্চল স্বনির্ভর হওয়ার সফলতা লাভ করে। জোয়ারের সময় নোনা পানির তীব্র আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ায় মানুষ ফসল উৎপাদনে সফলতার গৌরব অর্জন করে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কাছে আবেদন জানিয়ে জনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তা-ঘাট মেরামত ও মানুষের বাড়িঘর পুর্নবাসনের পাশাপাশি মুহুরী ও মুছাপুর প্রকল্পের গেটগুলো কেন সময়মতো খোলা হয়নি তার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

আবদুল লতিফ জনি বলেন, স্রোতস্বিনী নদীগুলো ভরাট করে নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এর কারণে জাতি কতটুকু উপকৃত হয়েছে? কিভাবে দেশের মানুষের ক্ষতি হয়েছে? তা তদন্ত করা হোক। নদী হত্যাকারী পাহাড় ধ্বংসকারী, বনাঞ্চল দখলকারী ও ইটভাটা করে পরিবেশ নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হোক। শুধু তদন্ত নয়, উপদেষ্টামণ্ডলীর কাছে আকুল আবেদন, ঐ সমস্ত দখলকারী ও তাদের দোষরদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হোক। একই সাথে গত ৫০ বছর পূর্বের জাতীয় ভূমি নকশা অনুসারে দেশের প্রতিটি নদ-নদী খাল পুনরুদ্ধার ও নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হোক।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ