বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বেনজীর-আজিজের মতো আরও অনেকে ঘাপটি মেরে আছে।’
শুক্রবার (৩১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পানি-বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য অযৌক্তিকভাবে বারবার বৃদ্ধি ও বগুড়ায় তারেক রহমানের উদ্বোধন করা ‘ম্যুরাল’ ভাঙার প্রতিবাদে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতেই বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। জনগণ এই নিয়ে হইচই করুক। আর বেনজীর-আজিজের দিকে নজর যেন না যায়, মনোযোগ যেন না থাকে। যেগুলো এখন সবার চোখের সামনে ভাসছে। এ কারণে তারা এই দাম বাড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনীর প্রধান ও পুলিশের প্রধানও যে মাফিয়াতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত, সেটা জনগণ কিছুটা জানলেও, বিস্তারিত জানতো না। তারা আন্দোলন দমন করেছে। তৎকালীন আইজিপি প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু তারা নিজেরাও যে এত বিত্তবৈভবের মালিক, এটা জনগণ এখন জানছে। কেন তাদের এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে? কারণ এরাই তো বিএনপির মিছিল, কর্মসূচি, যেকোনও ধরনের সমাবেশ অত্যন্ত নির্দয়-নির্মমভাবে দমন করেছে। এর পুরস্কার হিসেবে শেখ হাসিনা তাদের একের পর এক পদোন্নতি দিয়েছেন।
বেনজীরকে এসপি থেকে পুলিশ কমিশনার, তারপর আইজিপি করেছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বেনজীর যে অপকর্ম করেছেন, শেখ হাসিনা সেগুলো দেখেও না দেখার ভান করেছেন। কারণ তিনিই তো অবৈধ। তিনি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী থাকার জন্যই এরা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছে। এ জন্য তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের ব্যবস্থা তারা নিতে পারে না।
বেনজীর-আজিজের মতো আরও অনেকে ঘাপটি মেরে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা জনগণকে দমন করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে, তারা মাফিয়াবান্ধব সরকার, তারা সিন্ডিকেট বান্ধব সরকার। এই সরকারই হচ্ছে অপরাধী সরকার। বেনজীর ও আজিজের সব দায়দায়িত্ব আওয়ামী লীগ সরকারের। একদিন জনগণের আদালতে জনগণ বিচারক হয়ে এই সরকারের সব অপকীর্তির বিচার করবে।
রিজভী বলেন, জীবনের ওপর নাম পানি, যারা এই পানি কেড়ে নেয়, তারা তো ইয়াজিদের মতো। ইয়াজিদ যেমন ইমাম বাহিনীর পানি কেড়ে নিয়েছিল ফোরাত নদী অবরোধ করে। ইমাম বাহিনীর অনেক শিশু পানির তৃষ্ণায় কাতরাতে কাতরাতে মারা গিয়েছিল। সরকার তো সেটাই করছে জনগণের সঙ্গে।
মানুষের বেঁচে থাকার কোনও অবলম্বনই শেখ হাসিনা রাখতে চান না মন্তব্য করে তিনি বলেন, গতকাল ডিজেল, পেট্রোল, অকটেনের দাম বাড়ানো হয়েছে। ডিজেলের দামের সঙ্গে অনেক কিছুর সম্পর্ক। সেচ, কৃষি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, গণপরিবহনের সম্পর্ক। অর্থাৎ এখানেও সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট পায়, তাকে যদি বেশি ভাড়া দিতে হয়, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে গতকাল জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে। অর্থাৎ জনগণ হচ্ছে ওদের (সরকার) কাছে একটা পাইলট প্রজেক্ট।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আপনার তো কষ্ট হয় না। কারণ আপনি বাড়ি গেলে সামনে পুলিশের হুইসেল বাজে। আর সাধারণ যারা যাত্রী বছরের আনন্দ করতে ঈদ পালন করতে যায় কষ্ট করে, সে খবর কি রাখেন আপনি? আপনার কথায় জনগণের সঙ্গে ব্যঙ্গ করা হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এনএইচ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ