কে মন্ত্রীর শ্যালক, আর কে সম্বন্ধী এটা বলতে গেলে যে বিপত্তি আরও বাড়তে পারে সেরকম একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করার সুযোগ পেয়েছি জানিযে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন- সেটা কাজে লাগাব এবং বুঝিয়ে দেব কাউকে ভাঙিয়ে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কেউ যদি অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় তার কপালে দুঃখ আছে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে অপহরণ ও মারধরের শিকার নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে এসব কথা বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
পলক বলেন, হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক, আইনগত ও সাংগঠনিক কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। সে ক্ষেত্রে কার কী পরিচয়, কে আমার ভাই, কে আমার শ্বশুর কিংবা শ্যালক এটা কোনো বিবেচনার বিষয় নয়। এটা নিয়ে আমি আসলেই বিব্রত, লজ্জিত, দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।
তিনি আরও বলেন, বিবেকের তাড়নায় আমার মনে হয়েছে এখানে আসা দরকার এবং স্পষ্ট বার্তা সকলের কাছে জানিয়ে দেওয়া দরকার। এই ঘটনায় জড়িত আমার আত্মীয় কিংবা যেই হোক, এটা ব্যবহার করে কোনো বাড়তি সুবিধা পাওয়ার সুযোগ নেই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান, সিংড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস।
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে সিংড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন অনলাইনে আবেদনের পর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের প্রতিলিপি জমা দিতে আসেন। সেখানে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে কালো মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে আবারও বেধড়ক মারধর করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে পরিবারের লোকজন নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
এ ঘটনার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবার প্রতিপক্ষ প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করে আসছেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার সুমন নামের এক আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন যে প্রতিপক্ষ প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের পক্ষ নিয়েই সুমনসহ অন্য আসামিরা দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধর করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় লুৎফুল হাবীবকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
স্থানীয় প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে উল্লেখ করে ইসির চিঠিতে বলা হয়, সব জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচিত্র বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদন ও পত্রিকায় ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। এরূপ ঘটনার জন্য কেন প্রার্থিতা বাতিল অথবা তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে লিখিত জবাবসহ নির্বাচন কমিশনে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
লুৎফুল হাবীব রুবেল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শেরকোল ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ