ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশি নাগরিকদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যার যে হিড়িক চলছে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
সোমবার (১৮ মার্চ) রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি এক কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এই বিবৃতিতে দেয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল রোববার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে সাদ্দাম হোসেন (১৫) নামের এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। এ সময় আরও একজনকে গুলি করে আহত করা হয়। গত কিছুদিন আগেও যশোরে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন নিহত হয়েছেন। প্রায় প্রতিদিন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। সীমান্তে অব্যাহত এই নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগ ডামি সরকার এই অবধি প্রতিবাদ তো দূরের কথা টু শব্দ পর্যন্ত করার সাহস দেখাতে পারেনি।
আরও বলা হয়, পৃথিবীর সবচয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত এখন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হলেও শুধুমাত্র নতজানু নীতির কারণে একতরফা হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিকার করতে পারছে না গণবিরোধী আওয়ামী সরকার। এর আগে ডামি সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী নানা সময়ে সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যার বিষয়ে যে মন্তব্যগুলো করেছেন তার মধ্যেই সরকারের দুরভীসন্ধি টের পাওয়া যায়। সীমান্ত হত্যা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন-‘এই বিষয়ে আমরা এখন কথা বলতে চাই না’। নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন ‘এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা! এ নিয়ে আলোচনার কি আছে’ ? অন্য এক মন্ত্রী বলেছেন, ‘নো কমেন্টস’।
‘কয়েক বছর আগে এক আওয়ামী মন্ত্রী বলেছিলেন, ভারতের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না! অর্থাৎ উল্লেখিত মন্ত্রীদের মন্তব্যে এটাই প্রমাণ করে যে, পরনির্ভরশীল সরকারের কাছে জনগণের জীবনের কোন মূল্য নেই, এরা প্রতিবাদ করার সাহসও রাখে না। যারা নিজ দেশের জনগণের ওপর জুলুম চালায় তাদেরকে বিদেশি প্রভূর শরণাপন্ন হয়েই থাকতে হয়। ক্ষমতার জন্য এরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে জনগণের জীবনকে প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলির নিশানা বানাতে কুন্ঠিত হয় না। কেবল সীমান্তে পাখির মতো মানুষকে গুলি করে হত্যা নয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে লুটপাট, হামলা, ভাংচুর, এমনকি ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রতিবাদ করে না শেখ হাসিনার আজ্ঞাবাহী সরকার।’
বিবৃতিতে রিজভী বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে ফেলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার জন্য একান্ত অনুগত হয়ে গোলামী করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পক্ষ থেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক গুলি করে বাংলাদেশি কিশোর হত্যাসহ এর পূর্বের সকল হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই৷
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ