ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ডামি ভোটের পর লুটপাটে মেতেছে আওয়ামী সিন্ডিকেট: রিজভী

প্রকাশনার সময়: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:০৫

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে লুটপাটে মেতে উঠেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন চাল, ডাল, তেল, চিনি, শাকসবজি, মাছ—মাংসসহ সব জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে ঊর্ধ্বশ্বাসে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে মানুষ এখন মাছের কাঁটা কিনে খাচ্ছে। তিনি বলেন, মুরগীর বদলে মুরগীর চামড়া ও ঠ্যাং কিনে খাচ্ছে মানুষ। শুধু সরকারি দলের সিন্ডিকেটের কারণে এই ভরা মৌসুমে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় না নিয়ে বেআইনীভাবে বাড়ানো হয়েছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম। আর বাড়িভাড়া বৃদ্ধি হচ্ছে জ্যামিতিকহারে। বাড়িভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই। অথচ সচিবরা ডুপ্লেক্স বাড়িতে থাকেন মাসিক মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়ায়।

আজ রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি, তার প্রমাণ কই’। যারা অপরাধ করে তারা নিজেদেরকে নিরাপরাধ ভাবে। প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচনে জালিয়াতির সবচেয়ে বড় প্রমাণ আপনি নিজেই। কারণ আপনার নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনের সচিব নিজেই বলেছেন, যারা জিতবে ডিসিদের কাছে তাদের তালিকা আগেই দেওয়া আছে, ঘোষণা দিয়ে দিলেই বাসায় গিয়ে ঘুমাতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী, আপনার জালিয়াতির নির্বাচনের প্রমাণ কেবল আন্তর্জাতিকভাবেই উত্থাপিত হয়নি, দেশেও এর ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। শুধু তাই নয়, শুণ্য ভোটকেন্দ্রে ছবি এবং ভিডিও—ই কেবল দেখা যায়নি, বিভিন্ন আসন থেকে প্রার্থীরা জালিয়াতি হচ্ছে বলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আপনার ভোট জালিয়াতির তথ্য আপনার দলের নেতারাই সংবাদ সম্মেলন করে জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। গতকাল তারাও আপনার সামনে বসেছিলেন। আপনার বক্তব্য শুনে তারা হয়তো লজ্জা পেয়েছেন।

রিজভী বলেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) মতে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু হয়, তাহলে আপনার নিয়োগকৃত প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন যে তার কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্ট ছাড়া আর কাউকেও দেখা যায়নি। এরপরও আপনি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে কোনো মুখে কথা বলেন। আপনি সত্যকে বস্তাবন্দী করে রাখতে সবচেয়ে বেশি দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করার পরও বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল নির্বাচনের ভিডিও ফুটেজসহ নানা অনিয়ম তুলে ধরেছে। ১০ বছরের শিশুর ভোট দেওয়া, কেন্দ্র দখল করে গণহারে সিল মারা এবং তারা নির্বাচনের পূর্বাপর নিজেরা নিজেরা খুনোখুনি, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ভাংচুরের অসংখ্য ভিডিও ও স্থির চিত্র ভাইরাল হয়েছে এবং গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। ভোটারবিহীন শুণ্য ভোটকেন্দ্র তো সারাদিন দৃশ্যমান হয়েছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। জনগণ এই ভোট সর্বান্তকরণে বর্জন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শুধু আপনিই ‘চোখ থাকিতে অন্ধ’।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, এক দফার আন্দোলন চলছে, চলবে। বহু মৃতুঞ্জয়ী সংগ্রামের ঐতিহ্যবাহী দল বিএনপি। জনগণের সংগ্রামী ঐক্য, সংকল্প ও বীরত্বকে সাথে নিয়ে দখলদার আওয়ামী সরকারের পতন নিশ্চিত করে এক দফার আন্দোলন বিজয়ের পথে ধাবিত হচ্ছে। যে রাজনৈতিক জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে শেখ হাসিনা দমিয়ে রাখতে পারবেনা। জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, ডা. আবদুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, জেড মোর্তুজা চৌধুরী তুলা, আমিনুল ইসলাম, তরিকুল আলম তেনজিং, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, অধ্যাপক ইমতিয়াজ বকুল প্রমুখ।

নয়াশতাব্দী/একে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ