ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আবারো বাকশাল কায়েম করেছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, আমাদের আন্দোলন বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নয়। আমাদের আন্দোলন একদলীয় বাকশালী সরকারের বিদায় করে হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার আন্দোলন। ক্ষমতা বা অর্থের মোহে নয়, আমাদের লক্ষ্য জনগণের ভোটাধিকার ও হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।
মঈন খান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। সেজন্যই ৭ জানুয়ারি দেশের জনগণ ডামি নির্বাচনের ভোট বর্জন করেছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ব্যর্থ এবং জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত। দেশের জনগণ অতীতেও আপোস করেনি এবারও ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রশ্নে আপোস করবে না।
তিনি আরও বলেন, আজকে যে কারণে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে সেই লক্ষ্যকে উধাও করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তারা বহুবার গণতন্ত্র হত্যা করেছে। ১৯৭৫ সালে ১১ মিনিটের ব্যবধানে সংসদে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। পরে সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেন। আজকে বিগত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে গণতন্ত্র হরণ করেছে। বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন টাইমসের প্রবন্ধে বলা হয়েছে- আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে বাকশাল-০২ কায়েম করেছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা গণতন্ত্র নতুনভাবে জনগণের হাতে তুলে দিতে চাই। সেজন্যই আমরা রাজপথে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে কর্মসূচি পালন করে আসছি। বাংলাদেশের হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। বাংলাদেশের মানুষ কখনো মুখ বন্ধ করে বসে থাকে না।
মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সংঘাতের রাজনীতি চায় না। তার সবার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে রাজনীতি চায়। সত্যিকারের উন্নয়ন চায়। শুধু ঢাকার উন্নয়ন চান না।
তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বে কোথাও কী আছে যে সীমান্তে হাজার হাজার মানুষ গুলিতে মারা যায়? দুটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের দেশের সীমান্তে সাধারণ মানুষকে গুলি করে মারে? আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।
মঈন খান বলেন, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার সংগ্রামে আমরা আছি। আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের যে সংকট সেই সংকট উত্তরণে একটি নাম স্মরণীয়। তিনি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা চালিয়েছিল সেদিন জিয়াউর রহমান নির্দেশনা না দিলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশকে নতুনরূপে পরিচালনা করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আধুনিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। শুধু তাই নয়, আঞ্চলিক শান্তি-সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য সার্ক গঠন করেছিলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেডআরএফ এর রিসার্চ সেলের আহ্বায়ক ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী। সংশ্লিষ্ট শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেডআরএফ এর ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহা. শামীম।
প্রকৌশলী কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদিন ফারুক, বিএনপির কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, জেডআরএফ এর ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মাহবুব আলম, মুক্তিযোদ্ধা দল ঢাকা মহানগরীর সভাপতি প্রকৌশলী হালিম মিয়া প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/এসএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ