বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, মানুষের ঐক্য ও ন্যায়ের শক্তির কাছে বন্দুকের শক্তি টিকতে পারে না। সুতরাং সরকারকে বলবো- গণতন্ত্রের পথে এসে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিন, না হলে পরিণতি ভালো হবে না।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
মঈন খান এসময় বলেন, গুলি-বন্দুক ও টিয়ারগ্যাস দিয়ে মানুষকে পরাভূত করা যাবে, তবে জনগণের ভালোবাসা পাওয়া যাবে না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। যা বিশ্বের সকল গণমাধ্যমে বলা হয়েছে। তবুও সরকার বুঝতে পারছেনা যে, তাসের ঘরের মতো তারা কখন ধ্বসে যাবে!
আওয়ামী লীগ জনগণের জন্য কাজ করেনা মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা একটি দলের সরকার এবং লগি-বৈঠার রাজনীতি করে। তারা দেশের সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। তারা সংবিধানের কথা বলে প্রতারণা করে যাচ্ছে।
এসময় তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কোন সংবিধানে লেখা আছে যে, আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ সরকার কুক্ষিগত করতে পারবেন?
উন্নয়ন দিয়ে জনগণের মন ভুলিয়ে রাখা যায় না উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, একটি দেশ যখন গণতন্ত্রহীনতায় নিপতিত হয়, তখন কেউ বসে থাকতে পারে না। শিক্ষকসহ সকল পেশাজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা নব্য বাকশাল তথা বাকশাল-২ এর পদ্ধতির মূলোৎপাটন করতে চাই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যে দর্শন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে। এই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মধ্যে কিন্তু মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, চাকমা, গারো সকল উপজাতি ঐক্যবদ্ধ ছিলো। আমরা বিভেদের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এখন তো কথা বলার সময় না। এখন আমাদের প্রতিবাদ করার সময়। আমরা গত ১৫ মাস ধরে লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছি। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। কোনো সহিংস রাজনীতিতে বিএনপি বিশ্বাসী নয়। অথচ বিএনপিকে মৌলবাদী দল হিসেবে বিদেশিদের বোঝানোর বৃথা চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু সেটা বিদেশিরা খায় না। সেজন্যই তো গণতান্ত্রিক বিশ্বের দলগুলো ভুয়া নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি। বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যম বাংলাদেশের বর্তমান ব্যবস্থাকে উত্তর কোরিয়া মডেল আখ্যা দিচ্ছে। আর সরকার বলছে, তারা নাকি বাংলাদেশকে বিশ্বে রোল মডেল বানিয়েছে!
মইন খান আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা আজকে পূরণ হয়নি। দেশের স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিলীন হতে চলেছে। পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করে যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, সেই দেশে গণতন্ত্র নেই কেনো? আমাদের ভবিষ্যৎ কোথায়? এই সরকারকে আপনারা প্রশ্ন করুন, কেনো তারা গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করছে?
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে "নব্য বাকশালের মূলোৎপাটনে শহীদ জিয়ার রাষ্ট্রদর্শন" শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন, সংগঠনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান।
ইউট্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক নূরুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ইউট্যাবের সহ-সভাপতি একেএম মতিনুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/এমআই/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ