সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থিতা জানান দিতেই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন নারী নেত্রীরা। দলীয় মনোনয়ন কেনা ৬৮ জনের মধ্যে ৮-১০ জন ইতোমধ্যেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান প্রয়াত নেতাদের স্ত্রী ও সন্তান।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের নির্বাচনেও নৌকার টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান ও প্রয়াত নেতাদের মেয়ে-সন্তানরা।
এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাধারণ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কেনেন ৬৮ জন নারী নেত্রী। কিন্তু নৌকার টিকিট পান কেবল সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। চট্টগ্রামের নারীদের মধ্যে সরাসরি ভোটে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিতও হন তিনি।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, গত ৭ জানুয়ারির ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা ইতোমধ্যেই শপথ গ্রহণ করেছেন। মন্ত্রিসভাও গঠন করেছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। এখন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনের পালা।
সংবিধানে জাতীয় সংসদের ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। সাধারণ আসনে নির্বাচনের ফলের অনুপাত অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই আসন সংখ্যা ভাগ করা হবে। আওয়ামী লীগ এবার ২২৩টি আসনে জয় পায়। সেই হারে ৩৭টি সংরক্ষিত আসন পেতে পারে দলটি। সাধারণ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা নারী আসনের সদস্যদের নির্বাচনে ভোট দেবেন।
জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম থেকে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ছিলেন দুজন। তারা হলেন- ওয়াসিকা আয়শা খান ও খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। সনি এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে সাধারণ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আর ওয়াসিকা আয়শা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের তালিকার অন্যতম। দুবার সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। এবারও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে জনকল্যাণকর কাজসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছি। আবারও সুযোগ পেলে আদর্শ সমুন্নত রেখে কাজ করবো।
এছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন। তিনি নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মাতা।
আছেন সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত ডা. আফছারুল আমীনের স্ত্রী ডা. কামরুন্নেছা, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মহিলা এমপি চেমন আরা তৈয়ব। আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আবদুল্লাহ আল হারুনের মেয়ে শামীমা হারুন লুবনা। চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর স্ত্রী কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য রিজিয়া রেজা চৌধুরী।
এ বিষয়ে হাসিনা মহিউদ্দিন বলেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি রয়েছে। তফসিল ঘোষণা করা হলে দলীয় মনোনয়ন চাইবো।
এদিকে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন চেমন আরা তৈয়ব। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বলেন, সরাসরি আসনে নির্বাচন করতে লড়াই করেছি। ভাগ্যে জোটেনি। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নৌকা প্রার্থীর জন্য মন-প্রাণ দিয়ে কাজ করে তাকে বিজয়ী করেছি। প্রধানমন্ত্রীর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। তার সিদ্ধান্ত শিরোধার্য।
শামীমা হারুন লুবনা বলেন, জনগণের জন্য কাজ করা রাজনীতিবিদদের বড় প্লাটফর্ম হচ্ছে জাতীয় সংসদ। নারী সংসদ সদস্য হিসেবে সুযোগ পেলে মানুষের জন্য আরও বড় পরিসরে কাজ করতে চাই।
নয়া শতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ