ঢাকা, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিলেন নুর

প্রকাশনার সময়: ১৮ আগস্ট ২০২৩, ২২:২২
ফাইল ছবি

গ্রেফতার নেতা-কর্মীদের মুক্তি না দিলে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের (ডিএমপি) কার্যালয় ঘেরাও করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারের সামনে সড়কে মশিউর রহমান, ছাত্রনেতা বিএন ইয়ামিনসহ সবার মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তত্তাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের একদফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

নুরুল হক নুর বলেন, ‘আগে আমি বলে ছিলাম যে থানা এলাকায় আমাদের নেতাকমী গ্রেফতার হলে সে থানা ঘেরাও করা হবে। এখন আমি বলছি- মশিউর বিন, ইয়ামিনসহ বন্দিদের মুক্তি না নিলে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি হবে ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাও।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানন্ত্রী বলছেন যুক্তরাষ্ট্র আর পশ্চিমারা আমাকে সরিয়ে বিরোধীদের ক্ষমতায় আনতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমারা নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষ আপনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। ১৪ বছরে রাজপথের আন্দোলনে রক্তাক্ত করেছেন, অনেক মা-বোনকে সন্তান ও স্বামী হারা করেছেন। এসব মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে নামাতে চায়। আপনাকে কেউ ক্ষমতায় রাখতে পারবে না।’

আপনি ভারতের উপর ভরসা করতে চান। ভারতের নিজেরই লেজেগোবরে অবস্থা, বলেন ভিপি নুর।

আওয়ামী লীগ এখন ভারতের উপর নির্ভর করে ক্ষমতায় থাকতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারতের বিজিপি সরকারের পক্ষের লোকজন বলে, বাংলাদেশে জামায়াতকে সরকারে আনা মানে ভারত হুমকিতে পড়বে। বুঝেন অবস্থা, হিন্দুত্ববাদী বিজিপি বলে বাংলাদেশ জামায়াত ক্ষমতায় আসা মানে ভারতের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে।’

ভারতকে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ন্যায্য ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে নূর বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্দলীয়, নিরপক্ষে ও স্বচ্ছ নির্বাচনের পক্ষে থাকতে হবে।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘সরকার নুরুল হক নুরের আশপাশের লোকদের গ্রেফতার করে আন্দোলন দমাতে চায়।’

গ্রেফতার ছাত্রনেতা ইয়ামিনের বাবা রফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘ছাত্ররা ন্যায়ের পথে আন্দোলন করছে। তাদের গ্রেফতার করবেন না। তাদের ন্যায়ের পথে চলতে দিন। আমার ছেলে জেলে থাকলেও দেশের সব তরুণরা আমার সন্তান। যারা আন্দোলনে আছে সবাই আমার সন্তান। একজন সন্তান যতক্ষণ আন্দোলনে থাকবে, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।’

ইয়ামিনের মা হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমরা কথা বলার মতো অবস্থা নেই। তারপরও আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি আমার ছেলেকে মুক্তি দিন।’

গ্রেফতার মশিউর রহমানের বাবা মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করতাম। আমার ছেলেকে গ্রেফতার করে তার হাতে ককটেল দিয়ে মিথ্যা বলানো হয়েছিল যে, এ ককটেল ভিপি নুর ও রাশেদ দিয়েছে। সেদিন থেকে আমি আওয়ামী লীগ করা বাদ দিয়েছি।’

মশিউর রহমানের স্ত্রী সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘আমার স্বামীকে ইন্টারভিউয়ের কথা বলে সাংবাদিক সেজে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে বলা হয় সাঈদীর মৃত্যুর দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করার অপরাধে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এখন দেখছি মোদি বিরোধী আন্দোলনের সময় নাকি আমার স্বামী জড়িত ছিল এ অভিযোগ আনা হয়। আমি বলছি, আমার স্বামী নির্দোষ। তাকে মুক্তি দিন।’

সংগঠনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার পোদ্দার বলেন, ‘দেশ আজ দুইভাগে বিভক্ত একদিকে দেশ প্রেমিক মুক্তযোদ্ধা। আর অন্যদিকে লুটপাটকারী টাকা পাচারকারীরা। এ টাকা পাচারকারীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।’

ছাত্র পরিষদের আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীদের কথায় স্পষ্ট হচ্ছে সরকারের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে। যেকোনো সময়ে কাউকে দায়িত্ব দিয়ে পালাতে পারে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’

সভা শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

নয়াশতাব্দী/এমটি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ