ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পিছনে সাতটি চক্র ছিল’

প্রকাশনার সময়: ১৭ আগস্ট ২০২১, ০১:৫৭ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২১, ১১:৫৮

জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পিছনে কমপক্ষে সাতটি চক্রের সম্মিলিত ও সুদীর্ঘ ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

রোববার ( ১৫ আগস্ট) লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের আমরা চিনি। তারা ছিল নিতান্ত সাধারণ সৈনিক। এই ষড়যন্ত্রে কমপক্ষে সাতটি চক্র সক্রিয় ছিল। কোনো কোনোটি ছিল ব্যক্তি বিশেষের ষড়যন্ত্র, কোনোটির পিছনে ছিল সম্মিলিত পরিকল্পনা ও উদ্যোগ।

তিনি বলেন, সবচেয়ে মর্মান্তিক বিষয় হচ্ছে জাতির পিতাকে হত্যার এই ষড়যন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে শুরু হয়েছিল। যাতে করে বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া পর তিনি জীবিত অবস্থায় আর বাংলাদেশে ফিরে আসতে না পারেন।’

গবেষক রিজভী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র, ধর্ম-নিরপেক্ষতা, সামাজিক ন্যায় বিচার এবং বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের গোড়াপত্তন করেছিলেন। তাকে নৃশংসভাবে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়াই ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এসবের পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। যথাযথ সময়ে তা প্রকাশ করা হবে।’

লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। এ বিষয়ে তিনি কখনোই আপোষ করেননি। আজ যারা নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে তারাই এক সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করে দেশকে পাকিস্তানের অংশ হিসেবেই রেখে দিতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফল্যের সঙ্গে যেভাবে এগিয়ে চলছেন তাতে সব ষড়যন্ত্রই মোকাবিলা করা সম্ভব।’

হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বলেন, ‘ঘাতক চক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। জাতির পিতার দুই সাহসী এবং সুযোগ্যা কন্যা শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা ৭৫ পরবর্তী স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭২ সালে ব্রিটেনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও প্রগতিশীল কূটনৈতিক সম্পর্কের যে ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন তার ওপরই আজ রচিত হয়েছে দুই দেশের কূটনৈতিক সাফল্যের পঞ্চাশ বছর।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক বিশেষ ভিডিও বার্তায় ব্রিটেনের লেবার পার্টি ও বিরোধী দলীয় নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তার অবদান অবিস্মরণীয়।

তিনি স্যার হ্যারলড উইলসনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আন্তরিক সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে স্যার উইলসন শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং তারও ব্যক্তিগত অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন লন্ডন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার আহবাব আহমেদ ও নির্বাহী মেয়র জন বিগস, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গাউস সুলতান, ক্রয়ডন কাউন্সিলের মেয়র শেরওয়ান চৌধুরী, ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটির জালাল উদ্দিন ও বিশিষ্ট সংগঠক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ