ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভবন নির্মাণ ব্যয় অস্বাভাবিক অর্থ আত্মসাতের শঙ্কা!

প্রকাশনার সময়: ১৩ জুন ২০২২, ১০:০২

প্রসপেক্টাসে বিভিন্ন বিষয়ে ভুল তথ্যসহ অস্বাভাবিক ভবন নির্মাণ ব্যয় দেখিয়ে পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করতে যাচ্ছে আছিয়া সি ফুডস। যার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ বেশি দেখানো হয়েছে। অথচ এর আগে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চেষ্টা করেও সমস্যার কারণে কোম্পানিটিকে বিগত কমিশনের সময়ে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দেয়া হয়নি।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে— পুঁজিবাজারে আসার আগে কোম্পানির অস্বাভাবিক সম্পদ, বিক্রি, মুনাফাসহ নানা ইস্যুতে বেশি দেখানো নতুন কিছু না। তবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার শুরুতে সেই অবস্থার উন্নতির ইঙ্গিত দিয়েছিলেন; কিন্তু সেই অবস্থা ধরে রাখতে পেরেছে বলে মনে হচ্ছে না।

প্রসপেক্টাসে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী— আছিয়া সি ফুডসের ২৭ হাজার ২৩ স্কয়ার ফিটের ভবন রয়েছে। পুরাতন ভবন সত্ত্বেও যা নির্মাণে (জমি ছাড়া) ১২ কোটি ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬৮১ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি স্কয়ার ফিট ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪ হাজার ৪৭২ টাকা, যা কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয় বলে এ খাতের সংশ্লিষ্টদের দাবি।

প্রকৌশলী ও একটি ডেভেলপার কোম্পানির এমডি নয়া শতাব্দীকে বলেন, ভবন নির্মাণে সাড়ে ৪ হাজার টাকা ব্যয় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যত ভালো মানেরই করা হোক না কেন, সেটা বর্তমান জিনিসপত্রের বাজার দরেও ৩ হাজার টাকা অতিক্রম করতে পারে না। তবে আসল কথা হলো প্রায় সব কোম্পানিই পুঁজিবাজারে আসার আগে প্রতারণার জন্য বেশি করে দেখিয়ে থাকে।

তথ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার ভবন হিসাবেই সম্পদ বেশি দেখিয়েছে আছিয়া সি ফুডস। কোম্পানিটি যদি প্রতি স্কয়ার ফিটে ১ হাজার ৪৭২ (৪৪৭২-৩০০০) টাকা করে বেশি দেখিয়ে থাকে, তাহলে (১৪৭২ী২৭০২৩) ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার বেশি সম্পদ দেখিয়েছে।

একই বিষয়ে সমজাতীয় ব্যবসায়ী এক কোম্পানির কর্মকর্তা নয়া শতাব্দীকে বলেন, আছিয়া সি ফুডসের ভবন প্রায় ১৫-২০ বছর আগের। ওই সময় ভবন নির্মাণে সর্বোচ্চ ৫০০-৭০০ টাকা স্কয়ার ফিট ব্যয় হতে পারে। তবে সেটা কোনোভাবেই ৪ হাজার ৪৭২ টাকা হওয়ার সুযোগ নেই। আছিয়া সি ফুডসের ভবনে এমন কোন বিশেষত্ত্ব নেই, যে কারণেও খরচ বেশি হতে পারে।

তিনি বলেন, আছিয়া সি ফুডসের যে ২৭ হাজার স্কয়ার ফিট ভবনের দাবি করা হয়েছে, সেটাও সঠিক না। এর পরিমাণ অনেক কম হবে। এমনকি ওই কোম্পানি কর্তৃপক্ষ যদি সঠিক হারে ও নিয়মিত অবচয় চার্জ করত, তাহলে তাদেরই দাবিকৃত ১২ কোটি ৮ লাখ টাকার ভবনের এত বছর পরে এসে রিটেইন ডাউন ভ্যালু ৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা থাকত না। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ