ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঈদের ঢেউ অনলাইনে

প্রকাশনার সময়: ১৭ এপ্রিল ২০২২, ১১:১৫

কর্মজীবী নারী গুলশান আরা। সর্বদাই ব্যস্ত থাকেন তিনি। তাই ঈদের কেনাকাটায় রমজানের শুরু থেকেই বিভিন্ন অনলাইনে ঘুরপাক খাচ্ছেন। হঠাৎই গত সপ্তাহে একটি অনলাইনে পেয়ে যান নিজের পছন্দের শাড়ি। অর্ডারের পরের দিনই পেয়ে যান দুইখানা শাড়ি। এখন বাকি তার পরিবারের অন্যদের কেনাকাটা। এভাবেই দেশের অনেকেই এখন ঘরে বসে ঈদের কেনাকাটা অনলাইনেই সারছেন।

রমজান মাস আর উষ্ণ আবহাওয়া। এরপর রাস্তার যানজট তো আছেই। তার ওপর দোকানির সঙ্গে দর কষাকষি। এখন অনেকেই এসব ঝামেলা থেকে সরে এসেছেন। ঝুঁকছেন অনলাইন কেনাকাটার দিকে। ঘরে বসে ছবি দেখে অর্ডার করে পণ্য কিনছেন তারা। এবারের ঈদের মৌসুমে অনেকেই কেনাকাটার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে বেছে নিচ্ছেন ই-কমার্স সাইটগুলো। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে শপিং মলের মতোই ভার্চুয়াল জগতে আনারকলি, গাউন আর পাঞ্জাবি বিক্রি করছে সাইটগুলো। ৪০ থেকে ১০০ টাকার চার্জের বিনিময়ে একদিনের মধ্যে পণ্য পৌঁছে যাবে ক্রেতার ঘরে।

ঈদের জমজমাট বাজার নিয়ে বসেছে ই-কমার্স সাইট ‘অথবা ডটকম’সহ বিভিন্ন অনলাইন। পোর্টালগুলোতে মেয়েদের গাউন, কটন থ্রিপিস, শাড়ি, ছেলেদের পাঞ্জাবি, পায়জামা, কটি (ভেস্ট কোট) ফতুয়া বিক্রি হচ্ছে। মেয়েদের বাটারফ্লাই সিল্কের মধ্যে বিভিন্ন রঙের গাউন বিক্রি হচ্ছে ২১০০ থেকে ২২৫০ টাকায়। আড়াই হাজার টাকা থেকে তিন হাজার টাকায় টাঙ্গাইলের শাড়ি আর ৬০০ টাকায় কটন ব্লক প্রিন্ট থ্রিপিস পাওয়া যাচ্ছে। এমব্রয়ডারি জামা বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ থেকে ২৫৫০ টাকায়। এগুলো সবই ফ্রি সাইজ এবং সেলাইবিহীন। তাই সাইজ নিয়ে কোনো চিন্তা নেই।

দেশে অনলাইনে কেনাকাটার সবচেয়ে বড় বাজার ‘দারাজ ডটকম ডটবিডি’ এবারের ঈদে ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ভেস্ট কোট ও পায়জামার নতুন কালেকশন এনেছে। কটনের পাঞ্জাবির দাম ৪৬০ টাকা থেকে শুরু। সর্বোচ্চ বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৯৯০ টাকায়।

‘দারাজ ডট কম ডটবিডি-এর পাবলিক রিলেশন ও কমিউনিকেশন বিভাগের ম্যানেজার সায়ন্তনী তিশা বলেন, এবার অনলাইনে ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতাদের অনেক ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সারা বছরের চেয়ে এই সময়টাতে ৬-৭ গুণ বেশি বিক্রি হয়। রমজান ও ঈদকে কেন্দ্র করে আমরা চার ধাপে ক্যাম্পেইন পরিকল্পনা করেছি। বর্তমানে ‘ঈদ মোবাইল মেলা’ নামে একটি ক্যাম্পেইন চলছে। এতেও খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। ঈদে অনলাইনে কেনাকাটায় গ্রাহকরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

ছেলেদের জন্য ‘অথবা ডটকমে’ শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, পোলো শার্ট ও প্যান্ট পাওয়া যাচ্ছে। টি-শার্টের দাম শুরু ১৫০ টাকা থেকে আর পাঞ্জাবি সর্বনিম্ন ৫৯০ থেকে ২৪৯০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

অন্যতম ই-কমার্স সাইট ‘আজকের ডিল ডট কমে’ পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ৩৯০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে। সাইটটিতে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকায় ইন্ডিয়া পিওর সিল্ক শাড়ি বিক্রি হচ্ছে। আর সর্বনিম্ন জাপানি সিল্ক শাড়ি ৪৫০ টাকা।

মেয়েদের জন্য দারাজে রয়েছে শাড়ি, কটন কামিজ, লনের কামিজ, আনারকলি ও গাউনের কালেকশন। মাত্র ৮০০ টাকায় জর্জেটের গাউন মিলছে এখানে। এখানকার সবচেয়ে দামি সিল্কের গাউনের দাম ১৪ হাজার টাকা। সাইটটিতে সর্বনিম্ন ৪৯৯ টাকায় জাপানি সিল্ক শাড়ি এবং সর্বোচ্চ ৫২ হাজার টাকার হাফ সিল্ক জামদানি শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। মিলছে জর্জেটের হিজাব ও বোরকা।

প্রতিযোগিতামূলক দামের পাশাপাশি সাইটগুলোতে রয়েছে স্থানীয় ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও কেনাকাটার সুবিধা। রয়েছে পে-অন ডেলিভারি সুবিধার।

ই-কমার্স সাইটের পাশাপাশি আর্ট অ্যান্ড ইস্টিচড, রমণীর সাজ ও নীল আকাশ-এর মতো ফেসবুক পেজগুলোও বসেছে ঈদের কালেকশন নিয়ে। পেজগুলোর বেশিরভাগই ভারতীয় পোশাকের কালেকশন।

এসব পেজের মালিকগণ বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। সেইসঙ্গে ই-কমার্স সাইটগুলোর সার্ভিসে গ্রাহকের মধ্যে একটা আস্থা তৈরি হয়েছে। তাই অন্যবারের তুলনায় এবার বিক্রি বেশি।

অনলাইন শপের ক্রেতা ফারজানা সুলতানা বলেন, অনলাইন শপ আমাদের অনেক সময় ও টাকা বাঁচায়। যানজট পাড়ি দিয়ে শপিং মলে গিয়ে দর কষাকষিতে অনেক সময় ঠকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু অনলাইনে পণ্য দেখে অর্ডারের সুযোগ আছে, পছন্দ না হলে ফেরতেরও সুযোগ থাকে। সবমিলে অনেক সময় ও টাকা বাঁচে। যদি বাংলাদেশের ই-কমার্স সাইটগুলো তাদের সততা ধরে রাখে তাহলে আগামীতে দেশের অর্ধেক লোকই অনলাইনে কেনাকাটা করবে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ