সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এ বছর থেকে দুবলার চরে ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সোমবার (৮ নভেম্বর) এ নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্ট ১০ জেলার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) চিঠি পাঠানো হয়েছে।
একই সঙ্গে মেলার সময়ে পুন্যার্থী/তীর্থযাত্রী সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়া অন্যান্যদের সুন্দরবনে ভ্রমণ বন্ধ রাখারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
এর আগে গত ৪ নভেম্বর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠানো হয়।
মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখার যুগ্মসচিব মো. শাফায়াত মাহবুব চৌধুরীর সই করা চিঠিটি সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাটে, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ডিসিকে পাঠানো হয়েছে।
‘সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে দুবলার চরে (আলোরকোলে) রাসমেলা বন্ধ করা এবং সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিগণ ব্যতীত অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিদের দুবলার চরে (আলোরকোলে) গমন সীমিতকরণ’ শিরোনামের চিঠিতে বলা হয়, ধর্মীয় স্পর্শকাতর বিষয় বিধায় রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা ও পুণ্যস্নান চালু রাখা; সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে রাসমেলা ২০২১ সাল থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা এবং ওই সময়ে পুণ্যার্থী/তীর্থযাত্রী সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়া অন্যান্যদের সুন্দরবনে প্রবেশ অনুমতি বন্ধ রাখার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।
তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয় চিঠিতে।
প্রতি বছর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাসমেলা উপলক্ষে কয়েক হাজার মানুষ সুন্দরবনের দুবলার চরে যান। উৎসবে সব সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নেন।
বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, যেখোনে রাসমেলা হয়, সেটি একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। মেলা উপলক্ষে হাজারো মানুষ সেখানে যাওয়ায় বন্য প্রাণীর ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের ফেলা যাওয়া আবর্জনায় ক্ষতি হয় বনের। এতে জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়ে। এ কারণে বন, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে দুবলার চরে রাস উৎসব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ