ঢাকা, শনিবার, ৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১, ৩ রজব ১৪৪৬

অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সরকার

প্রকাশনার সময়: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৪৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সরকার।

বুধবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আহতদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যকার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় এই কথা জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্যকার্ড থাকার অর্থ হলো, যেকোনো সময় দেশের যেকোনো সরকারি হাসপাতালে কার্ডধারীরা চিকিৎসা পাবেন। এই কার্ড সবসময়ই থাকবে।

তিনি বলেন, জুলাইয়ে আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা করব। অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তাদের আর্থিক নিরাপত্তা সরকার নিশ্চিত করবে।

তিনি আরও বলেন, জুলাইয়ে আহত যোদ্ধাদের মানসিকভাবে, সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করার বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। এটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষগুলো যেন আনন্দে তাদের জীবনযাপন করতে পারে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সে বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।

ড. ইউনূস বলেন, যার যেটাতে আগ্রহ আছে তারা যেন সে কাজটি আনন্দ নিয়ে করতে পারে, ধাপে ধাপে সেটার পথ তৈরি করে দিতে হবে। চিকিৎসা দিয়ে শারীরিকভাবে সুস্থ করার পাশাপাশি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।

এর আগে, জুলাই আন্দোলনে আহত নরসিংদী ইউনাইটেড কলেজের শিক্ষার্থী ইফাত হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান ইমুর হাতে হেলথ কার্ড তুলে দিয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের মাঝে প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট জেলায় হেলথ কার্ড বিতরণ করা হবে।

এ সময় জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর খায়ের আহমেদ চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টাকে চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, এখন পর্যন্ত চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ১০৭৪ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৯ জনের দুচোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৪৫০ জনের এক চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, চোখের ইনজুরির জন্য প্রায় ৬৫০ অপারেশন করা হয়েছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে তিনশর বেশি রেটিনা সার্জারি হয়। চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বাইরে দুটো হাসপাতালে ৬০ জন রোগীর অপারেশন হয়েছে। কোনো কোনো রোগীর তৃতীয় ধাপেও অপারেশন প্রয়োজন পড়ছে। এখন পর্যন্ত চীন, ফ্রান্স, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিকিৎসকরা চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছেন এবং যে প্রক্রিয়ায় সেবা দেওয়া হচ্ছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তারা।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) পরিচালক ড. মুহাম্মদ আবুল কেনান প্রধান উপদেষ্টাকে তার হাসপাতালের চিকিৎসার অগ্রগতি জানিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের হাসপাতালে ২১ জন রোগীর হাত অথবা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। কয়েকজন রোগীকে বিদেশে নেওয়ার জন্য বাছাই করা হয়েছে।

চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগীই ধীরে ধীরে সুস্থ হবে এবং তাদের কেউ মৃত্যু ঝুঁকিতে নেই বলেও জানান তিনি।

নয়া শতাব্দী/এসআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ