রাজধানীর উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার বিভিন্ন ভিডিও বিশ্লেষণ করে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য নাজমা বেগমের ভাই আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মাহাবুব হাসান কাবুলের বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশের ব্যবহৃত নিরাপত্তা সামগ্রী, ওয়াকিটকি ও অস্ত্র উদ্ধার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানা ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে দেশি-বিদেশি বিপুল পরিমাণ মুদ্রাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জব্দ করা হয় দুটি দামি গাড়ি।

গ্রেপ্তাররা হলেন- শাহজাদা খান সাজ্জাদ, মো. তৌজিদুল ইসলাম ও মো. সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ বলছে, অবৈধ অস্ত্রের খোঁজে গিয়ে সন্ধান মেলে কোটি টাকার দেশি-বিদেশি মুদ্রা আর দামি গাড়ির।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান।

তিনি বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি টিম যৌথ অভিযান চালিয়ে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য হাবিব ইসলামের ছেলে আবির হাসান তামিমের শ্বশুরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে নগদ এক কোটি ১৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা উদ্ধার করা হয়।

ডিসি বলেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের ভিডিও বিশ্লেষণ করে সাবেক সংসদ সদস্য নাজমা বেগমের ভাই মাহাবুব হাসান কাবুলকে শনাক্ত করা হয়। তার বাসা থেকে পুলিশের ব্যবহৃত বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। যার মধ্যে খেলনা পিস্তল সাদৃশ্য অস্ত্র, গুলি, অস্ত্রের লাইসেন্স, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও ওয়াকি-টকি উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি আমরা একটি জিডির কপি উদ্ধার করি। যেখানে সংসদ সদস্য নাজমার ভাই কাবুল বর্ণনা দিয়েছেন তিনি কীভাবে অস্ত্র ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।

তিনি বলেন, এই কাবুলের শেল্টারদাতা হলেন ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিব ইসলাম। যদিও তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। হাবিব ইসলামের ছেলের বাসায় অভিযান চালিয়ে এই বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও বিশ্বের ৬টি দেশের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, দুটি ল্যান্ড ক্রুজার ও হ্যারিয়ার গাড়ি সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসান ও তার পরিবারের সদস্যদের।

এক প্রশ্নের জবাবে উত্তরা বিভাগের ডিসি বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য হাবিব ইসলাম বিভিন্ন সময়ে অস্ত্র প্রদর্শন করেছেন। তার কাছে একাধিক অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। আমরা ধারণা করছি, তার কাছে অবৈধ অস্ত্রও রয়েছে। অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া, পুলিশের ব্যবহৃত সরঞ্জাম কীভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে, সেটি জানার জন্য আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে বিস্তারিত জানা যাবে।

নয়া শতাব্দী/এসআর