ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)– এর পুরো জীবনটাই আমাদের জন্য আদর্শ। তার আদর্শকে যদি আমরা ধারণ করতে পারি এবং ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে চর্চা করতে পারি তাহলে সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারব। আমরা একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারব।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে ‘মহানবী (সা.) এর সাম্য ও সম্প্রীতির আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মুসলিম রাষ্ট্রে যদি কোনো মুসলমান কোনো অমুসলিম নাগরিকের ওপর অত্যাচার কিংবা জুলুম করে তবে কিয়ামতের দিন মহানবী (সা.) সেই মুসলিমের বিপক্ষে দাঁড়াবেন। যুদ্ধের ময়দানে নারী ও শিশুদের প্রতি একজন মুসলিম যোদ্ধার নীতি কী হবে সেই বিষয়েও নবী করিম (সা.) নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এছাড়া, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়ও রাসুল (সা.) অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এক হাজার ৪০০ বছর আগে পৃথিবীতে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই প্রথম ঘোষণা করেন, আরবের ওপর অনারবের কিংবা অনারবের ওপর আরবের, সাদার ওপর কালোর কিংবা কালোর ওপর সাদার বিশেষ কোনো মর্যাদা নেই।
তিনি আরও বলেন, নবী করিম (সা.) হলেন সারাবিশ্বের জন্য সুসংবাদদাতা। তিনিই মানব সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেন। তার পূর্বে সমাজে নারীর কোনো মর্যাদা ছিলো না, বরং নারীদেরকে নানাভাবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হতো। আমরা যদি সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যপূর্ণ একটি দেশ গড়তে চাই তাহলে নবী (সা.) এর আদর্শ মেনে চলা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে জাতীয় নির্বাচন দেওয়া হবে। এই নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ এবং সবাই তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। এরূপ নির্বাচনের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মধ্য দিয়ে আমাদের দায়িত্ব শেষ হবে। সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান তিনি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূইয়া, সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এম আবদুল্লাহ প্রমুখ। এতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্যরা অংশ নেন। শেষে মুসলিম উম্মাহর সুখ-সমৃদ্ধি এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ