ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিজ্ঞাপনের ফাঁদে কোকাকোলা!

প্রকাশনার সময়: ১১ জুন ২০২৪, ১৭:১৩

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামলার প্রতিবাদে সারাবিশ্বে ইসরায়েলি ও মার্কিন পণ্য বয়কট করে চলেছে সাধারণ শ্রেণি পেশার মানুষ। বাংলাদেশেও জোরেসোরে চলছে বয়কট। বয়কট পণ্যের প্রথম সারিতে রয়েছে কোকাকোলা। দেশব্যাপী এই বয়কট রুখতে সম্প্রতি একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছে, ১৯৩টি দেশে কোকাকোলা তৈরি হয় এবং ফিলিস্তিনেও রয়েছে এর ফ্যাক্টরি। ইসরায়েলি কোম্পানি নামে যে কথা প্রচলিত তা একেবারে অসত্য।

বিজ্ঞাপনটি প্রকাশ হওয়ার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন দেশের জনসাধারণ। প্রতিষ্ঠান তো বটেই, বিজ্ঞাপন নির্মাতা, এমনকি অভিনেতাদের উপরেও চটেছেন অনেকে। বিজ্ঞাপনটিতে অভিনয় করেছেন ব্যাচেলর পয়েন্ট খ্যাত অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন, শিমুল শর্মা, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু প্রমুখ।

এদিকে, তোপের মুখে বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে নিয়েছে কোকাকোলা। মঙ্গলবার (১১ জুন) সকাল থেকে বিজ্ঞাপনটি আর দেখা যাচ্ছে না। তবে, এ প্রসঙ্গে এখনও কোনো বিবৃতি দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিলেও প্রতিক্রিয়া থামেনি সাধারণ মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমা চেয়ে ফেসবুকে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন অভিনেতা শরাফ আহমেদ জীবন এবং শিমুল শর্মা। সেসব পোস্টের মন্তব্যঘরেও নেটিজেনদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শরাফ আহমেদ জীবন লেখেন, ‘আমি একজন নির্মাতা এবং অভিনেতা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। বিগত দুই দশক ধরে আমি নির্মাণ ও অভিনয়ের সাথে জড়িত। ব্যক্তিগত জীবনে আমি সবসময় মানবাধিকার বিরোধী যেকোনো আগ্রাসনের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছি এবং আপনাদের অনুভূতি ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছি।’

এদিকে শিমুল শর্মা বলেন, ‘আমি মাত্র আমার জীবনের পথচলা শুরু করেছি, আমার এই পথচলায় ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন এবং আমাকে ভবিষ্যতে একজন বিবেকবান শিল্পী হয়ে ওঠার জন্য শুভ কামনায় রাখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।’

অন্যদিকে ‘ফিলিস্তিনেও কোকাকোলার ফ্যাক্টরি আছে’ বলে কোকাকোলার বিজ্ঞাপনকে ‘উপহাস’ মন্তব্য করে এর প্রচার বন্ধের দাবি করেছে ইসলমী রাজনৈতিক সংগঠনগুলো। এক বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জানিয়েছে, শুধু ইউটিউব থেকে প্রত্যাহার করলে হবে না। কোন প্রচার মাধ্যমেই তা প্রচার করা যাবে না। ফেইসবুক, ইউটিউবসহ সকল প্রচার মাধ্যম থেকে এই বিজ্ঞাপন সরাতে হবে।

কোকাকোলার বিতর্কিত বিজ্ঞাপন ঘিরে মুখ খুলেছেন সোশ্যাল মিডিয়া এক্টিভিস্ট ও ইসলামি চিন্তাবিদরাও। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক শায়েখ আহমাদুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে লেখেছেন, ‘আপনার ঈদ হোক চিহ্নিত ইসলামবিদ্বেষীদের পণ্যমুক্ত। সাধারণ মানুষের বর্জন যে কত শক্তিশালী হাতিয়ার, তা আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট। ঈমানের দাবিতে এই শক্তিশালী হাতিয়ারকে সঠিক জায়গায় ব্যবহার করুন। আমাদের বর্জন হোক মজলুমের প্রতি ভালোবাসা নিবেদনের জন্য।’

মালয়েশিয়ায় বসবাসরত জনপ্রিয় বাংলাদেশি ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী ব্যক্তিগত ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে লেখেছেন,‘কোরবানীর আগে আগে ওদের বিজ্ঞাপনটা অনেকটা পাগলকে সাঁকো না নাড়ানোর অনুরোধের মতোই হয়েছে। পণ্য বয়কটের মুভমেন্ট খানিকটা ঝিমিয়ে পড়েছিল। এবার নতুন করে আরো চাঙ্গা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্জন এবং জনসচেতনতা চলবে একইসাথে। শুধু পণ্যই নয়, ইসলাম বিদ্বেষী সবকিছুকেই বর্জন করতে হবে। এবারের ঈদ হোক ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত, হোক চিহ্নিত সকল ইসলাম বিদ্বেষী পণ্যমুক্ত।’

নয়াশতাব্দী/একে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ