ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

উন্নয়নের ‘কোপ’ বৃক্ষে

প্রকাশনার সময়: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৬

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে সারা দেশ। দিন দিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। কষ্টের সীমা নেই জীবজন্তু ও পশুপাখিরও। প্রকৃতিকে ঠান্ডা করতে জোর দেয়া হচ্ছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে। কিন্তু উন্নয়নের নামে বৃক্ষ নিধনও থেমে নেই। নানা অজুহাতে চলছে গাছ কর্তন। মানা হচ্ছে না পরিবেশবিদদের নির্দেশনাও। ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আবহাওয়া।

প্রতি বছরই বাড়ছে তাপমাত্রা। এ বছর যা অনেক বেশি অনুভূত হচ্ছে। এরই মধ্যে দুই দফা রেড এলার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বিরূপ এ অবস্থার মধ্যে দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুওগাঁয়ের বালিয়াডাঙ্গী ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে বৃক্ষ নিধন। উন্নয়নের নামে এ দুই স্থানে সহস্রাধিক বৃক্ষ কর্তন করা হচ্ছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর— ঠাকুরগাঁও: প্রকৃতিকে ঠান্ডা করতে দেশব্যাপী বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। তবে ঠাকুরগাঁওয়ে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার গাছ কেটে ফেলছে বন বিভাগ। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ও পাড়িয়া ইউনিয়নের ৩৭ কিলোমিটার রাস্তার ৪ হাজার গাছ কাটার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। দাবদাহের এ দুঃসময়ে গাছ কাটায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। গত শুক্রবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দরপত্র পাওয়া দিনাজপুরের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ করা কিছু শ্রমিক রাস্তার গাছ কাটছেন। এক সপ্তাহ আগে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দরপত্রের কার্যাদেশ অনুযায়ী ৪ হাজার গাছ কাটবেন তারা। গত এক সপ্তাহে ৩ শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে বলে জানান শ্রমিকরা।

গেল বছরেও এই উপজেলার বড়বাড়ী, আমজানখোর ও চাড়োল ইউনিয়নের প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তার ৫ হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়। পরে ৮ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে নতুন গাছ লাগালেও অবশিষ্ট ফাঁকা জায়গাগুলোতে গাছ লাগানোর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। জেলা বন বিভাগ বলছে, ৮ ইউনিয়নে রাস্তর দুই পাশে অবশিষ্ট থাকা গাছগুলো কেটে ফেলার জন্য দরপত্র দিয়েছে বন বিভাগ। এর মধ্যে দুটো ইউনিয়নে গাছ কাটা শুরু হয়ে গেছে।

বন বিভাগের আহ্বান করা দরপত্র অনুযায়ী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের লোহাগাড়া থেকে তিলকরা সরাকন্দি পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও ধনতলা ইউনিয়নের পাঁচপীর থেকে ফুটানী হাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার, তিলময় বাবুর বাড়ি থেকে এনামুল চেয়ারম্যানের বাড়ি হয়ে বাহার জিলা পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার ও সিন্দুরপিন্ডি থেকে খোঁচাবাড়ি হয়ে তীরনই নদীর শেষ সীমানা এবং দলুয়া হয়ে পান্তা ভিটা পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটারসহ মোট ৩৭ কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার পাশের বিশাল আকৃতির গাছগুলোর গায়ে সিরিয়াল নম্বর দেয়া হয়েছে।

মশালডাঙ্গী গ্রামের কৃষ্ণ রায় মাঠে কাজ করে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, রাস্তার ধারে থাকা গাছগুলোর ছায়ায় কৃষক ও শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষেরা বসে একটু বিশ্রাম নেয়। এ তীব্র দাবদাহের মধ্যেও এখন রাস্তার দুইপাশের বিশালাকৃতির গাছ খুঁজেই পাওয়া যায় না। যে কটা আছে সেগুলোও কেটে ফেললে এলাকাটা মরুভূমি হয়ে যাবে। তাই কয়েকটা মাস কোনো গাছ না কাটলে খুব উপকার হয়। পথচারী আব্দুস সালাম বলেন, পরিবেশটা ঠান্ডা হলে গাছগুলো কাটুক তাতে আপত্তি নেই। এখন গাছগুলো কাটলে প্রচণ্ড রোদে মানুষসহ পশুপাখির জন্য পরিবেশ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।

স্কুলছাত্র আবু শামিম বলেন, গরমের কারণে আমাদের স্কুল বন্ধ রয়েছে। বাড়ি থেকে স্কুল ৭ কিলোমিটার দূরে। রাস্তার দুপাশে গাছ থাকলে আরামে স্কুলে যাতায়াত করা যায়। এখন গাছগুলো কাটতে শুরু করেছে, স্কুল খুললে যেতে খুব কষ্ট হবে। পাড়িয়া ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী বলেন, দরপত্র যখন হয়েছে ঠিকাদার গাছ কাটবেই। এতে বাঁধা দেয়ার সুযোগ নেই। তবে গ্রামবাসীর দাবি গরমের দিনগুলো পার করে কাটুক। এটা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন এবং বন বিভাগকে প্রয়োজনে লিখিত আকারে জানাব আমরা। ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের বন কর্মকর্তা শফিউল আলম মন্ডল বলেন, গাছগুলো কাটার উপযোগী এবং যারা লাগিয়েছেন তাদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাটার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফছানা কাওছার বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় গাছগুলো কাটা বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদার ও বন বিভাগকে জানিয়েছি। দাবদাহ কমে গেলে দরপত্র অনুযায়ী ঠিকাদার কাটবেন। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, ৪ হাজার গাছ কেটে ফেলছে সেটা নিয়মকানুন মেনে কাটা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেয়ার পরই আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।

জাবি: গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে ঈদুল ফিতরের পর আরও পাঁচ দিন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল। ছুটি শেষে গরমেই মধ্যে আজ খুলছে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। গরমের তীব্রতা থেকে বাঁচতে দেশব্যাপী বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে চলছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। গরম থেকে গাছই যখন রক্ষা করে, ঠিক এমন সময় ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ৪০০ গাছ কাটার প্রস্তুতি নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন।

সারা বিশ্বে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অংশ হিসেবে বাদ নেই আমরাও। বাংলাদেশে মনুষ্যসৃষ্ট কারণ যেমন: গাছপালা কেটে ফেলা, বন উজাড় করা, গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাওয়া, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জলাশয় ভরাটের কারণে দিন দিন তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের এমন সিদ্ধান্ত অবাক করার মতো। সরেজমিন দেখা যায়, চারুকলা অনুষদের ভবন, গাণিতিক ও পদার্থবিদ্যা বিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন ও জীববিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের জন্য টিনের ঘেরাও দিয়েছে প্রশাসন। দরপত্র থেকে জানা যায়, জীববিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের জন্য ৪৮ কোটি, গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের জন্য ৫৮ কোটি ও চারুকলা অনুষদের জন্য ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জীববিজ্ঞান অনুষদ ও গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে আর চারুকলা অনুষদ ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে।

জীববিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের জন্য ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণাগারের বিপরীতে এবং গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের জন্য পদার্থবিজ্ঞান ভবনের পাশের জলাশয়ের জায়গা বরাদ্দ করেছে প্রশাসন।

অন্যদিকে চারুকলা অনুষদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনি হলের বর্ধিতাংশের জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ জায়গাগুলোয় ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ৪০০ গাছ কাটার বন্দোবস্ত করেছে। পাশাপাশি চারুকলা ভবনের জন্য বরাদ্দ করা জায়গা অতিথি পাখির ‘ফ্লাইং জোন’ হিসেবে পরিচিত। দেশের গরমের এ পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের মহাপরিকল্পনা ছাড়া এতগুলো গাছ কাটার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনরা।

অপরিকল্পিত উন্নয়নের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসা ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, ‘তারা মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কাজ শুরু করতে চায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই। কারণ তারা লুকোচুরি করে কাজ শুরু করতে পারলে তাদের কোনো স্টেকহোল্ডারদের কাছেই জবাবদিহি করতে হয় না। লেকচার থিয়েটার হলে ৬২টি ক্লাসরুমে প্রতি ঘণ্টায় ৬ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারবে। তারপরও তিনটি অনুষদের এক্সটেনশন বিল্ডিং তাদের দরকার। তিনি আরও বলেন, যেখানে দ্বিতীয় রেজিস্ট্রার ভবনটাই পূর্ণাঙ্গ করা যায় মাত্র ৪০ কোটি টাকায়, সেখানে কিছু তোয়াক্কা না করে প্রশাসন তৃতীয় প্রশাসনিক ভবন করতে চায়। কারণ অর্থ অপচয় করে পকেট ভারী করা যায়। ফলে প্রকল্প অফিস হয়ে গেছে জাহাঙ্গীরনগরে দুর্নীতির আঁতুড়ঘর। টাকা আসছে টাকা খরচ করতে হবে, ভাগবাঁটোয়ারা করতে হবে— তারা আছে এই নীতিতে।

যে কারণে মাস্টারপ্ল্যানের তোয়াক্কা না করে এ রকম ধ্বংসাত্মক ক্যাম্পাস তৈরি করছে। দীর্ঘমেয়াদি প্ল্যান করে যদি এ কাজগুলো হতো, তাহলে আমাদের তাতে কোনো বাধা থাকত না। এ পরিস্থিতি বড় কোনো আন্দোলনের দিকেই আমাদের নিয়ে যাচ্ছে।’ জানা যায়, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হচ্ছে ১০ তলাবিশিষ্ট লেকচার থিয়েটার হল কাম এক্সামিনেশন হল। নির্মিতব্য এ লেকচার থিয়েটারে ৬২টি সুসজ্জিত শ্রেণিকক্ষ থাকবে, যাতে একসঙ্গে ১০০ জন শিক্ষার্থী বসতে পারবেন। প্রতিটি ক্লাসরুমে ওয়াল র‍্যাক থাকবে, যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য ল্যাপটপ ও অন্যান্য পাঠ-প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা যাবে।

আরও থাকবে ১০টি ল্যাব, যা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্য শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারবে। নির্মাণাধীন লেকচার থিয়েটার দুটি চালু হলে ক্লাস রুম সংকটের পাশাপাশি ল্যাব সংকট ও দূর হবে। কেবল বরাদ্দ থাকায় নতুন ভবন নির্মাণ করাকে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় বলছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে অপরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। অপরিকল্পিতভাবে শহীদ রফিক জব্বার হলের পাশে ছেলেদের নতুন তিনটি হল নির্মাণ করা হয়েছে। শব্দদূষণ, নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে শেখ রাসেল হলের ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের রাস্তায় দেয়াল তুলে দিয়েছেন শহীদ রফিক জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা।

এর সর্বশেষ পরিণতি হিসেবে গত মার্চে সংঘর্ষে জড়ান তিন হলের শিক্ষার্থীরা। সংঘর্ষে দুই হলের সম্পদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ টাকা। ছাত্রীদের নতুন হল করা হয়েছে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের ১০০ ফুটের মধ্যে। গাড়ির শব্দে মাথাব্যথা, রাতে ঘুম না হওয়া, পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে না পারাসহ বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনও। ভবনটি হল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের রাস্তার পাশে হওয়ায় গাড়ির শব্দে ক্লাস করতে সমস্যা হতো শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তাই সেই রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর আগে মেয়েদের মাঠ তৈরির কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের টারজান পয়েন্টে গাছ কাটা হয়। তবে কিছুদিন পর পরিকল্পনা পাল্টে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু ছাত্রীদের হল থেকে কাছে হওয়ায় ছাত্রদের নিরাপত্তা বিবেচনায় প্রশাসনিক ভবন থেকে যাতে ছাত্রী হল দৃশ্যমান না হয়, এ জন্য সেখানে পুনরায় গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সসিং অ্যান্ড জিআইএসের গবেষণায় দেখা গেছে, গাছপালা থাকলে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কম থাকে। ঢাকার সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গাছপালার আচ্ছাদন থাকার ফলে সূর্যরশ্মি সরাসরি মাটিতে পৌঁছাতে পারে না। এটি সে এলাকায় মাইক্রো ক্লাইমেট ভালো রাখে।

গাছপালা থাকলে মাটিতে অনেক লতাগুল্ম জন্মে। সব মিলিয়ে স্থানীয় তাপমাত্রা কমে যায়। যে স্থানে গাছ নেই, সেখানে সূর্যের তাপমাত্রা মাটিতে এসে সরাসরি পড়তে থাকে। এতে ক্যাপিলারি ফ্লোর কারণে মাটিতে ভূগর্ভস্থিত পানির স্তর নেমে যেতে থাকে। গাছ কম থাকলে কয়েক দিনের টানা বেশি তাপমাত্রা পরিবেশে যুক্ত হতে থাকে। তবে ‘একটি সবুজ টেকসই ক্যাম্পাস বিনির্মাণে চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে দেখা যায়, গত ৩৫ বছরে (১৯৮৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছপালা কমেছে প্রায় ৩৭ শতাংশ। এভাবে গাছপালা কমতে থাকলে জীববৈচিত্র্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের দাবি, উন্নয়নের জন্য গাছ কাটা প্রয়োজন হলেও তা যেন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের মাধ্যমে হয়।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ