ঈদের ছুটির পর সোমবার (১৫ এপ্রিল) থেকে সব অফিস-আদালত খুলেছে। তাই কর্মস্থলে যোগ দিতে এদিন সকাল থেকেই ট্রেন, বাস ও লঞ্চে করে অনেকেই ঢাকায় ফিরছেন। যাত্রীরা বলছেন, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়। যাওয়ার সময় কষ্ট হলেও ফিরতি যাত্রায় স্বস্তিতে তারা ঢাকায় পৌঁছেছেন। কোথাও কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। বিশেষ করে রাস্তা-ঘাট ফাঁকা থাকায় বাসযাত্রীরা নির্বিঘ্নে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকায় ফিরতে পেরেছেন।
এদিন সকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে তুলনামূলক কম ভিড় দেখা গেছে। টার্মিনালের উল্টো পাশের সড়কে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাসগুলো যাত্রী নামাচ্ছেন। যাত্রীরা নেমে তাদের ব্যাগ, লাগেজ নামাচ্ছেন বাসের বক্স থেকে। নওগাঁ থেকে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় কোনো যানজট নেই। তাই খুব কম সময়ে ঢাকায় চলে এসেছি। আজকে থেকে অফিস খোলা তাই তড়িঘড়ি করে ঢাকায় আসা। ছেলে-মেয়েকে বাড়ি রেখে এসেছি। তারা কয়দিন পর ঢাকায় আসবে। এদিকে ঈদের ফিরতি যাত্রায় বাসে কোনো ভোগান্তি পোহাতে না হলেও ট্রেনে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসা আফজাল হোসেন বলেন, এবার অনেকদিনের ছুটি ছিল। আসার সময় অনেক ভিড় হবে চিন্তা করে ছোট দুই ছেলে মেয়েসহ স্ত্রীকে বাড়িতেই রেখে এসেছি। কয়েকদিন পর যাত্রীর চাপ কমলে ছোট ভাই তাদের ঢাকায় নিয়ে আসবে। আমার অফিস খোলা তাই আমি লোকাল ট্রেনে দাঁড়িয়েই কোনোরকম চলে এসেছি।
একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে পঞ্চগর থেকে ঢাকায় ফেরা সৈয়দ আশরাফ বাতেন বলেন, বাড়িতে সবাই একসাথে ছিলাম। ঈদ আর বৈশাখ একসাথে উদযাপন করেছি। আজ থেকে অফিস খোলা। তাই কষ্ট হলেও বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হলো। বাচ্চাদের স্কুলও খুলে যাবে। তাই সবাইকে নিয়েই চলে এসেছি। অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চল থেকে লঞ্চযোগে আসা মানুষের চাপ গত দুদিনের চেয়ে বেড়েছে।
সোমবার রাজধানীর সদরঘাট ঘুরে এবং বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে দেখা যায়, সকাল ৮টা পর্যন্ত সদরঘাটে ৭৮টি লঞ্চ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঢাকায় এসেছে। ঘরে ফেরা মানুষের চাপ সামলাতে প্রায় সব লঞ্চ ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে ফের যাত্রী আনতে দ্রুত টার্মিনাল ত্যাগ করছে।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিটিএর কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, সকাল ৮টা পর্যন্ত ৭৮টি লঞ্চ ঢাকায় এসেছে। যেখানে গতকাল একই সময়ে ৯১টি লঞ্চ রাজধানীতে এসেছিল।
উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষে সোমবার (১৫ এপ্রিল) অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা ও শেয়ারবাজার খুলেছে। ঈদুল ফিতরের আগে শেষ কর্মদিবস ছিল গত ৯ এপ্রিল। ঈদ ও বাংলা নববর্ষ মিলিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছিল ১০ এপ্রিল থেকে, যা শেষ হয় ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ এবং ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে টানা ১০ দিন ছুটি কাটিয়েছেন।
নয়া শতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ