ঢাকা, রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইউরিয়া সার আমদানি নিয়ে জটিলতা

প্রকাশনার সময়: ১০ মার্চ ২০২৪, ০৯:১৫

ঘটা করে উদ্বোধনের ৪ মাস পরও ঘোড়াশাল সার কারখানায় শুরু হয়নি কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন। অথচ কিস্তি পরিশোধ শুরু হয়ে গেছে গেলো সেপ্টেম্বর থেকেই। এরই মধ্যে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। অন্যদিকে, অর্থাভাবে ইউরিয়া সার আমদানি নিয়েও বহুমুখী জটিলতায় করপোরেশন। আর সামগ্রিক অবস্থায় জবাবদিহিতার ঘাটতি দেখছেন বিশ্লেষকরা।

ঘোড়াশাল সার কারখানা। প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ আর জাপানি প্রযুক্তিতে ভর করে নতুন করে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে। দৈনিক ২ হাজার ৮০০ টন উৎপাদন ক্ষমতার এই কারখানা পুরোপুরি চালু হলে তা থেকে মিলবে চাহিদার ৩৫ শতাংশ সার।

তবে কাজ শেষের আগেই উদ্বোধন করায় কিস্তির টাকা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়া এই প্রকল্প। যা উঠে এসেছে অর্থ ও কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো বিসিআইসির চিঠিতে। বলা হয়, এখনো সম্ভব হয়নি বাণিজ্যিক উৎপাদন। কিন্তু কিস্তি দিতে হচ্ছে গেলো সেপ্টেম্বর থেকে।

এমন অবস্থায় আগামী ১২ মার্চের মধ্যে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ আরো ৮৬৮ কোটি টাকা। যা সময়মতো দিতে না পারলে গুণতে হবে ২ শতাংশ হারে জরিমানা। ফলে এই টাকার জন্যও রাষ্ট্রীয় কোষাগারের দিকে তাকিয়ে বিসিআইসি। সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এখন কাঁচামাল সরবরাহের নিশ্চয়তা নেই। ফলে উৎপাদনে যেতে না পারলে এই ধরনের প্রকল্প বড় ধরনের দায় তৈরি করবে।

ইতোমধ্যে যা করেছে। এগুলোকেই বলা হয়ে থাকে সরকারের জন্য শ্বেতহস্তী। তাই এমন প্রকল্প নেয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। শুধু কিস্তি পরিশোধ নয়, ইউরিয়া সার আমদানি নিয়েও বহুমুখী আর্থিক জটিলতায় পড়েছে বিসিআইসি। পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নিরবচ্ছিন্ন সার আমদানির লক্ষ্যে বছরের শুরুতে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চার ব্যাংকে সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকার কাউন্টার গ্যারান্টি ইস্যু করা হয়। যার মাধ্যমে পিআইএফ ঋণ সৃষ্টি করে পরিশোধ করা হয় এলসি বিল।

তবে জানুয়ারি পর্যন্ত সৃষ্ট ৮ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায় ৩ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা। যা দ্রুত পরিশোধ না করলে গুণতে হবে চড়া সুদ। এমন অবস্থায় নতুন এলসি খুলতেও সমস্যায় পড়ছে করপোরেশন।

অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখ্ত বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। তখন সরকারকেই বেইলআউট করার জন্য বন্ড ইস্যু করতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের মূল্য বেড়ে গেছে। ফলে ভর্তুকির পরিমাণটা ক্রমশ বাড়ছে।

যা সরকারের বাজেট ব্যবস্থায় সংকুলান করার সুযোগ নেই। চিঠিতে বলা হয়, আমদানি ও স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন করা সারের বিপরীতে ভর্তুকি বাবদ পাওনা পৌনে ১২ হাজার কোটি টাকা।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ