ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

‘বেইলি রোডের আগুন কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’

প্রকাশনার সময়: ০২ মার্চ ২০২৪, ১৩:০৭ | আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪, ১৩:০৯

বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডকে ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড’ বিবেচনা করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন নগর পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান।

রাজধানীর বাংলামোটরে বিআইপির সম্মেলন কক্ষে শবিবার (২ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ‘বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড এবং ভবনে জীবনের নিরাপত্তাঃ বিআইপির পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিআইপি।

আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ঢাকায় যে পরিমাণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হয়, বিশ্বের আর কোনো শহরে এমন ঝুঁকি আছে কি না সেটা বিবেচনার দাবি রাখে। নিমতলী, চুড়িহাট্টা, বনানী এফআর টাওয়ার, মগবাজার, বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের পর বেইলি রোডের ঘটনাটি ঢাকায় জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি আবার সামনে নিয়ে আসলো। অথচ নগর পরিকল্পনা, ভবনের ডিজাইন, নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনা, ভবনের ব্যবহার, ভবনের অগ্নি প্রতিরক্ষা, ফায়ার ড্রিল, ভবন মালিকের সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণ এবং নগর সংস্থাসমূহের নিয়মিত তদারকি থাকলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। আর তাই এ ধরনের দুর্ঘটনা আসলে গাফিলতিজনিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা না করলে এবং এই বিষয়ে যে সব ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালনে গাফিলতি, উদাসীনতা, দায়িত্বহীন ও অন্যায় আচরণ করেছেন তাদের যথাযথ আইনের আওতায় না আনলে পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে।

তিনি বলেন, বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজ নামের ভবনটি তৈরি করা হয়েছিল অফিস হিসেবে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু এর বেশির ভাগই ব্যবহার হয়েছে রেস্তোরাঁ হিসেবে; যা সুস্পষ্টভাবে ইমারত আইন ও নগর পরিকল্পনার ব্যত্যয়। ভবনটিতে আটটি রেস্তোরাঁ, একটি জুস বার (ফলের রস বিক্রির দোকান) ও একটি চা-কফি বিক্রির দোকান ছিল। ছিল মোবাইল ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম এবং পোশাক বিক্রির দোকানও। ভবনটিতে অগ্নিনিরাপত্তার পর্যাপ্ত কোনো ব্যবস্থাও ছিল না। ভবনের মালিকপক্ষের দায়িত্বহীনতা, ভবনে থাকা রেস্তোরাঁয় গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে উদাসীনতার কারণেই অগ্নিকাণ্ডে এত প্রাণহানি হয়েছে। অথচ ভবনটিতে রেস্তোরাঁ করার কোনো অনুমতি ছিল না। তিনি বলেন, রাজউক কর্তৃক ভবনটির প্রথম থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত বাণিজ্যিক (শুধু অফিসকক্ষ হিসেবে) এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম তলা আবাসিক ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। ভবনটিতে রেস্তোরাঁ, শোরুম (বিক্রয়কেন্দ্র) বা অন্য কিছু করার জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়নি। কিন্তু ডেভেলপার কোম্পানি ভবন বুঝিয়ে দেওয়ার পর মালিকরা পুরো ভবনটি বাণিজ্যিক হিসেবে ব্যবহার করছিলেন, যেখানে অনুমোদনহীনভাবে বেশিরভাগই ছিল রেস্টুরেন্ট। মালিকরা বেশি ভাড়ার জন্য এক কাজের জন্য অনুমতি নিয়ে অন্য কাজে ব্যবহার করছিলেন। ভবন মালিকদের অতি মুনাফা লাভের প্রবৃত্তি এই আগুনের ঘটনায় মানুষের মৃত্যুর অন্যতম কারণ।

নয়াশতাব্দী/একে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ