চলতি বছর পূর্ণ হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ২৪ বছর। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মাতৃভাষা নিয়ে গবেষণার জন্য। তবে যাত্রার শুরু থেকে মসৃণভাবে এগোয়নি প্রতিষ্ঠানটির কাজ। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রভাবে নির্মাণপর্বের শুরুতেই পাঁচ বছর পুরোপুরি বন্ধ থেকেছে ইনস্টিটিউটের কাজ। এখন গবেষণা, গ্রন্থ প্রকাশ, জাদুঘর তৈরিসহ নানামুখী কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যে মান অর্জন ও বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের সম্পর্ক গড়ে ওঠা প্রত্যাশিত ছিল, প্রতিষ্ঠানটি তা পূরণ করতে পারেনি।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (আইএমএলআই) আইন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির জন্য ২৩টি সুনির্দিষ্ট কাজের কথা বলা আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাভাষা প্রচার ও প্রসারে কার্যক্রম গ্রহণ, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও ক্ষুদ্র জাতিগুলোর ভাষা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও গবেষণা-প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া, বাংলাসহ অন্যান্য ভাষা আন্দোলনের বিষয়ে গবেষণা ও ইউনেস্কোর সদস্য দেশগুলোতে প্রচার, বাংলাভাষার আন্তর্জাতিকীকরণে কার্যক্রম গ্রহণ, বিভিন্ন ভাষার উপাদান ডাটাবেজে সংরক্ষণ, অডিও ভিজ্যুয়াল পদ্ধতিতে বিলুপ্ত বা প্রায় বিলুপ্ত ভাষাগুলোকে দৃশ্যমান করা, বিভিন্ন ভাষার অভিধান প্রকাশ ও হালনাগাদকরণ, ভাষা ও বর্ণমালার আর্কাইভ নির্মাণ এবং পরিচালনা, সব ভাষার বিবর্তনবিষয়ক গবেষণা, ভাষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান-সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং বিশ্বমানের লাইব্রেরি ও তাতে ভাষার ওপর লিখিত যাবতীয় বই, ব্যাকরণ রাখা।
তবে প্রতিষ্ঠানটির নির্ধারিত ২৩টি কাজের লক্ষ্যমাত্রার অধিকাংশই শুরু করা হয়নি। কয়েকটি আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাভাষার আন্তর্জাতিকীকরণে নানা উদ্যোগও নেয়ার কথা। কিন্তু বিদেশে বাংলা ভাষার প্রসারে নেয়া হয়নি তেমন কোনো পদক্ষেপ।
যাত্রা শুরু:
জাতিসংঘের শিক্ষা, গবেষণা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর মহান রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের স্মারক একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। সে বছরের ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট স্থাপনের ঘোষণা দেন। তিনি ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০০৩ সালে। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের কারণে পাঁচ বছর কাজ বন্ধ থাকে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আবার নির্মাণকাজ শুরু হয়। এরই মধ্যে পরিকল্পিত ১২ তলা ভবনের ৭ তলা পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে।
লক্ষ্য ও কাজ:
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মূলত একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের সব মাতৃভাষা নিয়ে গবেষণাই এর মূল লক্ষ্য। পৃথিবীতে এখন টিকে থাকা মাতৃভাষার সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাত হাজার। এর অনেকগুলো বিপন্ন। ইতোমধ্যে অনেক ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের কাজের পরিধি ব্যাপক। ভাষা প্রমিতকরণ, বিপন্ন বা বিলুপ্ত ভাষার গবেষণা ও সংরক্ষণ এবং শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা- এ তিন পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানটির কাজ করার কথা।
গত ২০২২ সাল থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফ। তিনি বললেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে যে ভাষাগুলো কম বিকশিত বা বিপদাপন্ন, তাদের জিইয়ে রাখার ব্যবস্থা করা। ২০০১ সালে ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হলেও গবেষণা কাজ শুরু হয়েছে ২০১০ সালে।
হাকিম আরিফ বললেন, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জন্য ১৪ বছর বেশি সময় নয়। আবার গবেষণার জন্য মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে দক্ষ জনবলের অভাব আছে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যকে ভিত্তি করে যে কর্মপরিকল্পনা দরকার, সেটি সত্যিকার অর্থে করা হয়নি। ইনস্টিটিউটের যে জনবল কাঠামো দরকার সেটিও প্রকৃত অর্থে স্বীকৃত নয়। তিনি বলেন, ‘কতগুলো বিভাগ থাকবে, কত জনবল থাকবে সেটি আমি আসার পর নির্ধারণ করছি। বর্তমান কাঠামোতে ৯০টি পদ আছে। এর মধ্যে ৩৮টি পদই খালি।’
তিনি আরও বলেন, এখন তিনটি বিভাগে কাজ চলছে। পুরোপুরি কাজের জন্য মোটামুটি আটটি বিভাগ প্রস্তাব করা হয়েছে। আইসিটি থাকবে, অনুবাদ শাখা থাকবে, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ শাখা এসব থাকবে। এখন কাজ চলছে প্রশাসন অর্থ ও প্রশিক্ষণ বিভাগ, ভাষা গবেষণা ও পরিকল্পনা বিভাগ এবং পাঠাগার, আর্কাইভ ও জাদুঘর বিভাগে।’
এদিকে মহাপরিচালক নিজেই স্বীকার করলেন মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এখনো যথার্থভাবে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়নি। তিনি বললেন, ‘প্রতিবছরই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিছু সংযোগ করা হচ্ছে। তবে তা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে যায়নি। এখন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে হবে। আমাদের উদ্যোগ আছে। যেমন এবার সুইজারল্যান্ড বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জর্জ বার্ন রিম এসেছেন। তিনি মূল প্রবন্ধ পড়বেন। আরও তিনজন ভাষাবিদ আসবেন।’
উদ্দেশ্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের বাস্তব অর্জন কতটুকু- এমন প্রশ্নের জবাবে ইনস্টিটিউটের অতীত ও চলমান কাজের যে বিবরণ মহাপরিচালক ড. হাকিম আরিফ দিয়েছেন তার সারসংক্ষেপ নিচে দেয়া হলো।
দুই জাদুঘর:
মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে দুটি জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে। এর একটি ভাষা জাদুঘর। এত দিন এই জাদুঘর অস্থায়ী পর্যায়ে ছিল। এখন পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া হয়েছে। এখানে পৃথিবীর ১৯৯টি দেশের ভাষার নমুনা, জনগোষ্ঠীর নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত ও ছবি রয়েছে। জাদুঘরটি সবার জন্য উন্মুক্ত। ২০২২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি ইনস্টিটিউটের দোতলায় এই ভাষা জাদুঘর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দ্বিতীয়টি হলো- ভাষার লিখনরীতির আর্কাইভ। দীর্ঘ গবেষণা করে কাজটি করা হয়েছে। ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন ওই ভাষার লিখনরীতি। আর্কাইভে বিশ্বের ১৫২টি ভাষার লিখনরীতির বিস্তারিত বর্ণনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। যেমন চীনা, রোমান, আরবি- এমন ১৫২ ভাষার লিখনরীতি ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এটা পৃথিবীর একটি অনন্য আর্কাইভ।
এ ছাড়া ভাষা নিয়ে দেশ ও বিদেশের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে অনেকগুলো সেমিনার ও সভা হয়েছে। প্রকাশিত হচ্ছে জার্নাল।
নৃগোষ্ঠীর ভাষা সমীক্ষা:
মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের একটি বড় কাজ হলো ‘বাংলাদেশের নৃগোষ্ঠীর বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’। এটা ২০১৬ সালে শুরু হয়ে ২০১৮ সালে শেষ হয়েছে। দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত সমীক্ষায় ৪১টি ভাষা শনাক্ত করা হয়েছে। এই ৪১টি ভাষার মাত্র আটটি ভাষার নিজস্ব লিপি আছে। এক্ষেত্রে যে ভাষাগুলোর লিপি নেই, সেই ভাষার লিপি তৈরি ও প্রবর্তন করা ইনস্টিটিউটের কাজ। এর পরের কাজ হলো বিপন্ন ভাষাগুলোর শব্দ সংখ্যা বাড়ানোর জন্য পরিভাষা তৈরি করা।
ভাষামাত্রই ব্যাকরণ আছে। লিপি তৈরির পরের কাজ সেই ভাষার ব্যাকরণ এবং অভিধান রচনা করা। অভিধান খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, অভিধান রচনা করলে ভাষা বেঁচে থাকে। এ কর্মপ্রক্রিয়ার ভিতর দিয়েই ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। এরপর রয়েছে পাঠ্যপুস্তক রচনা ইত্যাদি।
এ ছাড়া বাংলাদেশে আরেক ধরনের ভাষা আছে। এগুলো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যেও ক্ষুদ্র। যেমন বেদেদের ভাষা। বেদে জনগোষ্ঠী যে ভাষায় কথা বলে তার নাম ‘ঠার’। এ ছাড়া আছে ডোমদের ভাষা। একে বলে ‘ডোম ভাষা’। বেদে ও ডোমদের অনেকেই মাতৃভাষা পরিবর্তন করে বাংলায় চলে এসেছেন। তাদের ভাষাও সংরক্ষণের কাজ চলছে।
মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিকল্পনা রয়েছে, সমীক্ষার তথ্য ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে ১০ খণ্ড বাংলা ও ১০ খণ্ড ইংরেজি বই প্রকাশ করা। বাংলায় প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। বাকি ৯ খণ্ডের প্রকাশনার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ২০২৪ সালে একসঙ্গে ১০ খণ্ড আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে।
মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে, ১৯৫২ সালের মহান মাতৃভাষা আন্দোলনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভাষা নিয়ে যে ধরনের আন্দোলন হয়েছে তার তথ্য সংগ্রহ করে ভাষা আন্দোলনের একটি পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনা করা, আর এ বিষয়ে একটি আর্কাইভ তৈরি করা।
নতুন উদ্যোগ:
সম্প্রতি মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট একেবারেই নতুন কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর একটি হলো ‘বহুভাষী পকেট অভিধান’ তৈরি। এ প্রকল্পে পৃথিবীর প্রধান ১৬টি ভাষা নিয়ে আলাদা চারটি বই করা হবে। বইগুলো পকেটে রাখার মতো আকৃতি দিয়ে বের করা হবে। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে পড়তে যান। অনেকে চাকরির সুবাদেও বিদেশ যাচ্ছেন। তাদের নিত্যদিনের ব্যবহারিক কাজে প্রয়োজন হয় এমন প্রায় দুই হাজার শব্দ থাকবে প্রতিটি বইয়ে। প্রথম বইটির মুদ্রণে প্রক্রিয়া চলছে। চলতি একুশে বইমেলাতেই আনুষ্ঠানিকভাবে বইটি প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
অনুবাদ শাখা:
অভিধান তৈরি করতে মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুবাদের জন্য একটি শাখা তৈরি করা হয়েছে। উন্নত ভাষার সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান বাংলা ভাষায় যুক্ত করা প্রয়োজন। একইভাবে বাংলা ভাষার সাহিত্য বিশ্বের উন্নত ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় ছড়িয়ে পড়া আবশ্যক। এর অংশ হিসেবে হুমায়ূন আহমেদের নির্বাচিত গল্পের ইংরেজি অনুবাদ হয়েছে। মুদ্রণ চলছে, এবারের বইমেলায় প্রকাশিত হবে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ছয়টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। এটিরও প্রকাশনার কাজ চলছে।
মাতৃভাষা বিশ্বকোষ: মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের আরেকটি বড় কাজ হচ্ছে ‘মাতৃভাষা পিডিয়া’ বা মাতৃভাষা বিশ্বকোষ তৈরি। এ বিশ্বকোষে পৃথিবীর সব মাতৃভাষার অন্তর্ভুক্তি থাকবে। ভাষা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য থাকবে। এ কাজ ইতোমধ্যেই অনেকটা এগিয়েছে। ২০২৪ সালে বিশ্বকোষ বাংলায় পাঁচ খণ্ডে ও ইংরেজিতে পাঁচ খণ্ডে প্রকাশ করা হবে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ভাষা, গবেষণা ও পরিকল্পনা) অধ্যাপক মোহা. আমিনুল ইসলাম বলেন, ভাষা দিবস আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলতে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক চালু করেছি। প্রতিবছর একবার এই পদক দুই ভাগে দেয়া হয়। এর একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক, অপরটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আন্তর্জাতিক পদক। প্রত্যেক ভাগে দুজন করে মোট চারজনকে এ পদক দেয়া হয়। ইনস্টিটিউটের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ অনুবাদ করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ ও ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে দেয়া ভাষণ অনুবাদ করা হয়েছে। এসব ভাষণ অনুবাদ করা হয়েছে চাকমা, মারমা, সাদ্রী, ত্রিপুরা ও গারো ভাষায়। ব্রেইল ও শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের জন্যও ভাষণের ওপর প্রকাশিত হয়েছে দুটি করে বই।
এ ছাড়া ভাষণ দুটি আইপিএতে (ইন্টারন্যাশনাল ফোনেটিক অ্যালফাবেট) তৈরি করা হয়েছে। নিয়মিত গবেষণা জার্নালের বাইরে আরও দুটি বিশেষ প্রকাশনা করা হয়। এগুলো হলো- মাতৃভাষা বঙ্গবন্ধু সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধু মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ ইস্যু। ত্রৈমাসিক নিউজ লেটার প্রকাশ করা হয় দুটি ভাষায়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের বাংলা ভাষা উচ্চারণ, বানান ও বাক্য গঠনের ওপরও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আছে বলেও জানান অধ্যাপক মোহা. আমিনুল ইসলাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে গবেষণা নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর এটি জারি করা হলে গবেষণার লক্ষ্যে ফেলো নিযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি দেয়ার পরিকল্পনাও আছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে গেছে অনেকটা ফেব্রুয়ারিকেন্দ্রিক। প্রতিষ্ঠানটির জনবল সংকটও তীব্র। ফলে প্রেষণে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারাই ভরসা।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ