ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

৯ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার ৬ হাজার ৪০১ জন : জরিপ 

প্রকাশনার সময়: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:৫৯
ছবি- সংগৃহীত

২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ হাজার ৪০১ জন রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ‘সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লিগ্যাল রিসার্চ’। সংগঠনটি আরও বলছে, সহিংসতার শিকার হওয়াদের মধ্যে ৭০ জন নিহত এবং ৬ হাজার ৩৩১ জন আহত হয়েছেন।

একই সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ৭ জন। বাকি ৬৩ জন ক্ষমতাসীন দলের আন্তঃকোন্দল ও বিরোধী দলের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। এছাড়া চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে পুলিশি হেফাজতে ৯৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মাস উপলক্ষে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লিগ্যাল রিসার্চ আয়োজিত ‘মানবাধিকারের ধারণা ও বাস্তবতা: বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট' শীর্ষক সেমিনারে এই জরিপ প্রকাশ করা হয়। জরিপ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট একেএম বদরুদ্দোজা।

এ সময় তিনি বলেন, ২০২২ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছে ৭ হাজার ৫৮৮ জন। যার মধ্যে নিহত ১২১ জন ও আহত ৭ হাজার ৪৬৭ জন। এছাড়া গত বছর ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, এসিড নিক্ষেপ ও পারিবারিক শত্রুতার জেরে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৩৫৬ জন নারী। পাশাপাশি গত বছর ১ হাজার ৪১৫ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

অ্যাডভোকেট একেএম বদরুদ্দোজা আরও বলেন, গত বছর বিভিন্নভাবে নির্যাতন বা হয়রানির শিকার হয়েছেন ২৫৩ জন সাংবাদিক। এর মধ্যে ২ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার, ৫ জন গ্রেফতার, ৪৩ জনকে হুমকি প্রদান, ১৬৫ জন আহত এবং ৩৮ জন লাঞ্চিত হয়েছেন। ২০২২ সালে ক্রসফায়ারে ৭ জন, গুলিতে ১৩ জন ও নির্যাতনে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গুমের শিকার হয়েছেন ৪৪৪ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুমের ঘটনা ঘটেছে ২০১৮ সালে, যার সংখ্যা ৯৮টি। আর সবচেয়ে কম গুমের শিকার হয়েছে ২০২২ সালে, ৭ জন।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালে মন্দিরে হামলা হয়েছে ১২টি, হিন্দু জনগোষ্ঠীর বাড়িঘর ভাঙচুর হয়েছে ১৬টি, মূর্তি ভাঙচুর হয়েছে ৪৩টি এবং আহত হয়েছেন ৪৮ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। ২০২১ সালে সংখ্যালঘু নিহত ৩, আহত ১০১ জন, বাড়িঘর ভাঙচুর ১৬১টি, জমি দখল ৫টি, মন্দিরে হামলা ১৮৯টিসহ মোট ৭৮টি ঘটনা ঘটেছে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আব্দুল মতিন বলেন, আমাদের তো অনেক মানবাধিকার আইন রয়েছে। কিন্তু এই আইনগুলো আমাদের এখানে মানা হচ্ছে না। আমরা সব সময় আইনগুলোকে পদদলিত করে আসছি। আমাদের এখানে কেউ গুম হয়ে গেলে তার আর খোঁজ পাওয়া যায় না। এখন তো কথায় কথায় গুম হয়ে যাচ্ছে। এই যে লেখক মোশতাক আহমেদ। সে কাউকে খুনও করেনি। কিন্তু তাকে জেলে নিয়ে মেরে ফেলা হলো। এই কাজগুলো আমরা এখন অবলীলায় করে যাচ্ছি।

সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লিগ্যাল রিসার্চের প্রধান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. মাসদার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।

নয়া শতাব্দী/এমবি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ