ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো জন্ম নিল ‘টেস্টটিউব বেবি’। জন্মের পর শিশুটি সুস্থ আছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, আনুমানিক ৩ সপ্তাহ আগে শিশুটির জন্ম হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি অধ্যাপক ফাতেমা রহমানের তত্ত্বাবধানে আছে।
তিনি বলেন, সরকারি কোনো হাসপাতালে এ প্রথম কোনো টেস্টটিউব বেবির জন্ম হলো। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত জানাবেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, টেস্টটিউব বেবি নেওয়া হয় মূলত আইভিএফ চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে আইভিএফ। এ পদ্ধতিতে স্ত্রীর পরিণত ডিম্বাণু ল্যাপারেস্কোপিক পদ্ধতিতে অত্যন্ত সন্তর্পণে বের করে আনা হয়। প্রক্রিয়াজাতকরণের পর ল্যাবে সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়া একই পদ্ধতিতে স্বামীর শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়। পরে ল্যাবে বিশেষ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয় সবচেয়ে ভালো জাতের একঝাঁক শুক্রাণু।
তারপর অসংখ্য সজীব ও অতি ক্রিয়াশীল শুক্রাণুকে ছেড়ে দেওয়া হয় নিষিক্তকরণের লক্ষ্যে রাখা ডিম্বাণুর পেট্রিডিশে। ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর এই পেট্রিডিশটিকে তারপর সংরক্ষণ করা হয় মাতৃগর্ভের পরিবেশ অনুরূপ একটি ইনকিউবেটরে। এরপর ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা ইনকিউবেটরের মধ্যে পর্যবেক্ষণের পরই বোঝা যায় নিষিক্তকরণের পর ভ্রূণ সৃষ্টির সফলতা সম্পর্কে। ভ্রূণ সৃষ্টির পর সেটিকে একটি বিশেষ নলের মাধ্যমে জরায়ুতে সংস্থাপনের জন্য পাঠানো হয়। জরায়ুতে ভ্রূণ সংস্থাপন সম্পন্ন হওয়ার পরই তা চূড়ান্তভাবে বিকাশ লাভের জন্য এগিয়ে যেতে থাকে এবং সেখান থেকেই জন্ম নেয় নবজাতক। এভাবে ৯ মাস পর যে শিশুর জন্ম হয়, তাকে টেস্টটিউব শিশু বলা হয়। কোনো টেস্টটিউবে এই শিশু বেড়ে ওঠে না।
জানা যায়, বাংলাদেশে প্রথম টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয় ২০০১ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। এরপর একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের শিশুর জন্ম হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই প্রথম এ ধরনের কোনো শিশুর জন্ম হলো।
নয়াশতাব্দী/এমটি
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ