ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শহর থেকে গরিব তাড়ানোর কাজ করছে রাজউক : পরিকল্পনামন্ত্রী

প্রকাশনার সময়: ১৫ জুলাই ২০২৩, ১৭:০৩
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান । ফাইল ছবি

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ঢাকা শহরের উন্নয়নে নগর পরিকল্পনায় রাজউক কতটা উন্নতি করেছে তা এখন ভাবার বিষয়। তারা (রাজউক) মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টার এবং পার্ক তৈরি করছে, ভাড়া দিয়ে খাচ্ছে। গরিবদের কাছ থেকে কম দামে জমি কিনে বড় লোকদের কাছে বিক্রি করছে। এর মাধ্যমে শহর থেকে গরিব তাড়ানোর কাজ করছে তারা। গরিব মানুষরা বাস্তুচ্যুত হয়ে এদিক সেদিক থাকছে।

শনিবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) অডিটোরিয়ামে ঢাকা ডেলিরিয়াম বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যেসব প্রতিষ্ঠান সে উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল তারা কতটুকু তা করতে পারছে সেটাও এখন ভাবার বিষয়। আমাকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলা হয়, কিন্তু আমি পরিকল্পনার সঙ্গে কোনভাবে জড়িত না। আমার আশপাশের কিছু লোক আছে তারা পরিকল্পনা করে। তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও দেশের পরিকল্পনা সঠিকভাবে করতে পারছে না। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেছিলেন তার কোনোটাই বাস্তবায়ন করতে পারছে না পরিকল্পনা কমিশন। পলিটিক্যাল প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের নির্দেশে পরিকল্পনা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘সরকার এখন দারিদ্রমুক্ত এবং সারাদেশে বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গ্রামের মানুষরা যাতে শহরের সুবিধা পায়, সে লক্ষে সরকার কাজ করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা যে ৮০ ভাগ জিডিপিতে অবদান রাখে এটা আদৌও কত ভাগ রিয়েল (সত্য) তা ভাবার বিষয়। এখানে সুষম বণ্টন নেই। সরকারপ্রধান সুষম অবস্থা চাইছেন সারাদেশে। এটির জন্য গ্রাম হবে শহর—সেটি ভাবা হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ঢাকাকে পরিকল্পিত করতে হলে , ঢাকার বাইরে সমন্বিত পরিকল্পনা ও ঢাকাকেন্দ্রিক পরিকল্পনা একসঙ্গে এগিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রাম পর্যায়ে নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মফস্বলে পুনর্জাগরণ প্রয়োজন। শুধু নগরায়ন করলে হবে না, অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ প্রয়োজন। অর্থনৈতিক সুবিধা ছাড়া কোনো উন্নয়নেই টেকসই হয় না। তবে এই উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন প্রয়োজন। সুন্দর নগরায়নের সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। সব জায়গায় সমান আইন থাকতে হবে। এ জন্য নাগরিককে সচেতন হতে হবে।’

আর্কিটেকচারের নির্বাহী পরিচালক আদনান জেড মোর্শেদ বলেন, ‘শহর পরিকল্পনায় সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই পরিকল্পনার ক্ষেত্রে দুই চারজনকে দিয়ে মহাপরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। টেবিলে বসে নগর পরিকল্পনা করলে হবে না। বাইরে বের হতে হবে । শহর কখনো বেহেস্ত হবে না। সবাইকে কাজ করতে হবে। বর্তমান যুগে শহর হচ্ছে অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। ভালো শহর করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নগর ব্যবহারে পরিবর্তন আনতে হবে। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এটাকে সামাজিক দায়বদ্ধতায় আনতে হবে।’

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ‘ঢাকা এখন বহু চরিত্রের সংমিশ্রণ। এই শহরটা অনেক বড় হয়ে গেছে। সময় ও চাহিদার অনুপাতে এখানে নানা কিছু তৈরি হয়েছে, তবে এখনো নারীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়নি। পাবলিক টয়লেটের সংখ্যাই এত অপ্রতুল যে কর্মজীবী নারীরা প্রতিদিনকার জীবনে চরমভাবে ভুক্তভোগী হন।’

নয়াশতাব্দী/এমটি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ