ঢাকা, রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘সরকার শিশুদের শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর’

প্রকাশনার সময়: ১১ জুন ২০২৩, ২১:৩৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তথা শিশুদের শিক্ষা, নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, ‘শিশুদের জন্য নিরাপত্তা, খাদ্য ও পুষ্টি, আশ্রয় ও সুরক্ষা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক বিষয় সম্পর্কিত নানাবিধ কর্মসূচিসহ শিশুশ্রম বন্ধ করার লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় টেকসই উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শিশুশ্রম-নিরসনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা কমিটিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। সোমবার (১২ জুন) ‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে রোববার (১১ জুন) দেওয়া বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ পর্যন্ত মোট ৮টি সেক্টরকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৩৮ ধরনের কাজ চিহ্নিত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকা হালনাগাদ করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত শিশুদের প্রত্যাহার করে বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা হচ্ছে এবং প্রায় শতভাগ শিশু স্কুলে যাচ্ছে। এ সকল কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ হতে শিশুশ্রম নিরসন সম্ভব।’

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস-২০২৩’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘শিশুর শিক্ষা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করি, শিশুশ্রম বন্ধ করি’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে শিশুদের উন্নয়ন ও বিকাশে শিশু আইন প্রণয়ন ও প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেন। তিনি সংবিধানে শিশু অধিকার সমুন্নত রাখেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার শিশুশ্রম-নিরসনের লক্ষ্যে ‘জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০’ প্রণয়ন করেছে। এছাড়াও শিশুদের উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় শিশু নীতি-২০১১’, ‘শিশু আইন-২০১৩’, ‘বাল্যবিবাহ বিরোধ আইন-২০১৭’ এবং গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের অধিকার ও সুরক্ষায় ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে।’

এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশকে সকল ধরনের শিশুশ্রম থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ’ কাজ করছে। সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের পুনর্বাসন এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বিকাশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমাদের সরকার জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বিষয়ক আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থন করেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শিশুশ্রম সমীক্ষা ২০০৩ অনুযায়ী বাংলাদেশে শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা ছিল ৩২ লক্ষ। আমাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ২০১৩ সালে শিশুশ্রম সমীক্ষা অনুযায়ী শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ১৭ লক্ষে দাঁড়িয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে শিশু বা কিশোর, আগামী দিনে সেই হবে বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশলের মূল চালিকাশক্তি। তাই আমাদের শিশুদের উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। শিশুশ্রমকে নির্মূল করে সকল শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি সরকারের পাশাপাশি শিশুশ্রম প্রতিরোধ ও শিশুদের কল্যাণে বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

নয়াশতাব্দী/এমটি

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ