অফিস বা অন্য প্রয়োজনে কোথাও যাচ্ছেন বাসযোগে। কিছু সময় পর দেখতে পেলেন, বাসের ভেতর জটলা, এর মধ্যেই কেউ একজন বমি করে দিয়েছে। এরপর যখন ভাড়া দিতে যাচ্ছেন, দেখতে পেলেন- পার্স ও মোবাইল কিছুই নেই!

সম্প্রতি এমনই বেশকিছু ঘটনার খবর পাওয়া গেছে রাজধানীতে। ঘটনার পেছনের রহস্য জানতে গিয়ে ডিএমপির তেজগাঁও থানা পুলিশ এমন একটি চক্রের ‘গুরু’কে গ্রেপ্তার করেছে। বাসের ভেতর জটলা পাকিয়ে ‘বমি করে ছিনতাই’ চক্রের ওই গুরুর নাম মো. স্বপন প্রকাশ ওরফে চোরা স্বপন।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবার তেজগাঁও থানার ফার্মগেট খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি ছুরি ও ছিনতাই করা টাকা উদ্ধার করা হয়।

বাসে যাত্রীবেশে উঠে বমি করে যারা ছিনতাই করেন, তাদের কাছে ‘গুরু স্বপন’ নামে পরিচিত এই চোরা স্বপন। তিনি বরিশালের কাজিরহাট থানার সন্তোষপুর গ্রামের মৃত আয়নাল ফকিরের ছেলে।

ওসি আরও বলেন, গ্রেপ্তার স্বপন চিহ্নিত ছিনতাইকারী। তার নামে অস্ত্র ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে ১০টি মামলা রয়েছে। তিনি একসময় চুরি করতেন। চুরির অভিযোগে বেশ কয়েকবার আটকও হন। এ কারণে গ্রামে সবাই চোরা স্বপন নামেই চেনে তাকে।

‘গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় এসে ছিনতাই শুরু করেন। প্রথমে অন্য দলের সঙ্গে থাকলেও, পরে নিজেই দল তৈরি করেন। নাম দেন ‘বমি পার্টি’। তার দলের সদস্যরা বিভিন্ন বাসে উঠে প্রথমে কৃত্রিম জটলা তৈরি করেন, এরপর কেউ একজন কৃত্রিম বমি করেন। বমি করার পর বাসের মধ্যে এক ধরণের হৈ-হুল্লোড় তৈরি হয়। সেই সুযোগে এই গ্রুপের সদস্যরা যাত্রীর মোবাইল, মানিব্যাগ ছিনিয়ে পালিয়ে যান।’

ওসি মহসিন বলেন, তারা যে বমি করেন, সেটা কৃত্রিম। চকলেট এবং পানির বিশেষ মিশ্রণে এই কৃত্রিম বমি করা হয়। কৃত্রিম এই বমি সবাই করতে পারে না। এই বমি করার ‘প্রশিক্ষণ’ দেন স্বপন। তাই তাকে এই ধরনের ছিনতাইকারী দলের সদস্যরা ‘গুরু স্বপন’ নামেই ডাকেন।

তাকে গ্রেপ্তারের বর্ণনা দিতে গিয়ে ওসি বলেন, মঙ্গলবার ফার্মগেটে একটি বাসে স্বপন তার আরও দুই সদস্য নিয়ে ওঠেন। তারা সেখানে বমি করে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করলে, যাত্রীরা দেখে ফেলেন। এসময় দুজন পালালেও স্বপনকে আটক করা হয়। পরে আটক স্বপনের কাছ থেকে একটি ছুরি ও ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।

নয়া শতাব্দী/এনএস