নরসিংদীর রায়পুরায় এক শারীরিক প্রতিবন্ধী তরুণকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর ভুক্তভোগীকে মরজাল ইউনিয়নের বটিয়ারা গ্রাম থেকে অপহরণ করা হয় এবং ভোরে তাকে জিরাহি গ্রামের নির্জন এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী তরুণের নাম কাজী শাহিন (১৭)। সে বটিয়ারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।
গ্রেপ্তার দুই তরুণ- উপজেলার বটিয়ারা গ্রামের মো. হারিছ মিয়ার ছেলে আবির ওরফে আপন (১৭) এবং জিরাহি গ্রামের নাসির উদ্দীনের ছেলে আরিয়ান হাসান নিলয় (১৭)।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে থানা প্রাঙ্গণে এক প্রেস কনফারেন্সে এসব তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে বাড়ির পাশে তরুণরা বিরিয়ানি খেয়ে সন্ধ্যার পর ভুক্তভোগীকে সুকৌশলে অপহরণ করে। পরে রাত সাড়ে ৯টায় অপহরণকারী চক্রটি ভুক্তভোগীর চাচাতো ভাই রফিক মিয়ার মোবাইলফোনে অপহৃতের ছবি পাঠিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহৃতের বাবা প্রথমে তাদের ২০ হাজার টাকা, পরে আরও ৬০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন।
এরইমধ্যে ভুক্তভোগী পরিবার বিষয়টি রায়পুরা থানা পুলিশকে অবগত করে। এদিকে অপহরণকারীরা রাতে রাজাবাড়িয়া এলাকায় টাকা নিয়ে আসার কথা বলে। স্বজনরা টাকা নিয়ে গেলে, ওঁৎপেতে থাকা থানা পুলিশের সদস্যরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের জিরাহি এলাকা থেকে রাত পৌনে ২টায় তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্যমতো জিরাহি গ্রামের নির্জন এলাকা থেকে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে পুলিশ ও স্থানীয়রা।
কাজী কামাল হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘টাকার জন্য এমন একটি প্রতিবন্ধী ছেলেকে অপহরণ করেছে, বিশ্বাসই হচ্ছে না। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এমন ঘটনা আর যাতে সমাজে না ঘটে, সেজন্য তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।’
ভুক্তভোগীর বাবা আমির হোসেন বলেন, ‘বিকেলে বাড়ির পাশে বিরিয়ানি খাওয়ার পর থেকেই খোঁজাখুঁজি করে ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। রাতে অপহরণকারীরা ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়ে এক লাক টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করা গেছে। বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করি। এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠিন শাস্তি দাবি করছি।’
ভুক্তভোগী কাজী শাহীন বলেন, ‘একজনের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। তাদের সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই, কি কারণে তারা এমনটা করেছে, তা জানি না।’
এ সংক্রান্ত প্রেস কনফারেন্সে জেলা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (রায়পুরা-বেলাব সার্কেল) আফসান আল আলম বলেন, ‘এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশনায় আমিসহ পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহবুব ও উপ-পরিদর্শক নিতাই সঙ্গীয় ফোর্স রাতেই অভিযান পরিচালনা করে প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার তিনজনের নাম উল্লেখ করে রায়পুরা থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের পুলিশি প্রহরায় আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ