ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

আমিনবাজারে ৬ ছাত্রকে হত্যা : ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশনার সময়: ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩:৪৬

রাজধানীর আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার দায়ের করা মামলোয় ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমত জাহান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আব্দুল মালেক, সাইফ মেম্বার, আব্দুর রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেপু, জমসের আলী, মীর হোসেন, মজিবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, রজব আলী, আলম নুরা, মোহাম্মদ রানা, আব্দুল হানিফ ও আসলাম মিয়া। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের বিশ হাজার জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকের সাত বছরের কারাদণ্ড ও দশ হাজার টাকার জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেকে ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— শাহিন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজিব হোসেন, ওয়াসিম, সাত্তার, সেলিম, মনির হোসেন, আলমগীর, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নুর ইসলাম, শাহদান হোসেন, টুটুল, মাসুদ, মোখলেস, টোটুল ও সাইফুল। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকর সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেকে ছয় মাসের কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়। অন্যদিকে, মামলা চলাকালে তিনজনকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত।

গত ২২ নভেম্বর ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমত জাহান রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন। মামলায় ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৫৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় দেওয়া হলো।

২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশি গ্রামের কেবলার চরে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

নিহতরা হলেন- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ম্যাপললিফের এ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শামীম (১৮), মিরপুর বাংলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র তৌহিদুর রহমান পলাশ (২০), একই কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র ইব্রাহিম খলিল (২১), উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র কামরুজ্জামান কান্ত (১৬), তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র টিপু সুলতান (১৯) ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র সিতাব জাবির মুনিব (২০)।

ঘটনার পর নিহতদের বিরুদ্ধেই ডাকাতির অভিযোগ এনে গ্রামবাসীর পক্ষে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন আব্দুল মালেক নামে এক বালু ব্যবসায়ী। অন্যদিকে ছয় কলেজছাত্র হত্যাকাণ্ডে ৬০০ গ্রামবাসীকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন।

২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি র্যাব সদরদপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ৬০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ওই বছরের ৮ জুলাই মামলার ৬০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জশিট) গঠন করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলালউদ্দিন।

চার্জশিটভুক্ত ৬০ আসামি হলেন—ডাকাতি মামলার বাদী আব্দুল মালেক, সাঈদ মেম্বর, আব্দুর রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেফু, নিহর ওরফে জমশের আলী, মীর হোসেন, মজিবর রহমান, কবির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রজুর আলী সোহাগ, আলম, রানা, আ. হালিম, ছাব্বির আহম্মেদ, আলমগীর, আনোয়ার হোসেন আনু, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নূর ইসলাম, আনিস, সালেহ আহমেদ, শাহাদাত হোসেন রুবেল, টুটুল, অখিল, মাসুদ, নিজামউদ্দিন, মোখলেছ, কালাম, আফজাল, বাদশা মিয়া, তোতন, সাইফুল, রহিম, শাহজাহান, সুলতান, সোহাগ, লেমন, সায়মন, এনায়েত, হায়দার, খালেদ, ইমান আলী, দুলাল, আলম, আসলাম মিয়া, শাহীন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজীব হোসেন, হাতকাটা রহিম, মো. ওয়াসিম, সেলিম মোল্লা, সানোয়ার হোসেন, শামসুল হক ওরফে শামচু মেম্বার, রাশেদ, সাইফুল, সাত্তার, সেলিম ও মনির। আসামিদের মধ্যে কবির হোসেন, পর্বত ও রাশেদ মারা গেছেন।

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ