রাজধানীর রাজারবাগ দরবার শরীফের সব সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান ও তাদের জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি-না, তা তদন্ত করতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এই আদেশের ফলে রাজারবাগ দরবার শরীফ ও পীরের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদালতে রাজারবাগ দরবারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মুরাদ রেজা। রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
এর আগে, গত ১১ অক্টোবর রাজারবাগ দরবার শরীফের সব সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাজারবাগ পীরের আবেদনে সাড়া না দিয়ে আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত। এছাড়া রাজারবাগ পীরের অনুসারী শেখ মফিজুল ইসলামও হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আজ সেই আবেদন খারিজ করে দিলেন আপিল বিভাগ।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ দরবার শরীফের সব সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এই তদন্ত করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এছাড়া তাদের কোনো জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি-না তা তদন্ত করতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে আবেদনকারীদের মামলা প্রতারণামূলক কি-না, সিআইডিকে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পরে হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিতে রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমান নিজেই আবেদন করেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ পীর ও তার চক্র কর্তৃক দেশব্যাপী দায়ের করা গায়েবি মামলার তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করে ভুক্তভোগী আট পরিবার। ৭ বছরের শিশু, নারী, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মাদরাসার শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ আটজন ভুক্তভোগী আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনকারীরা হলেন মো. আবদুল কাদের, মাহবুবুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, মো. আলা উদ্দিন, জিন্নাত আলী, আইয়ুবুর হাসান সিয়াম, নাজমা আক্তার ও নার্গিস আক্তার।
আবেদনে রাজারবাগ পীর ও তার চক্র দ্বারা দেশব্যাপী আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। এছাড়া রাজারবাগ শরীফ ও পীর দিল্লুর রহমানের সম্পত্তি এবং ব্যাংক হিসাব তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে সারা দেশে করা মামলার বিষয়ে একটি তদন্ত চাওয়া হয়। রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজিপিসহ ২০ জনকে বিবাদী করা হয়।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ