আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা ছিল তাদের খুঁজে বের করতে, তাদের চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন করা হবে।
রোববার সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বলেছেন- যারা এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিল, তাদের চিহ্নিত করে বাংলার মানুষের কাছে সাক্ষ্যপ্রমাণসহ তাদের মুখোশ উন্মোচন করার জন্য একটি কমিশন হওয়া প্রয়োজন। আরো আগেই হয়তো কমিশন গঠন হয়ে যেত। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এটা একটু বিলম্ব হচ্ছে। করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে এলে কমিশন গঠন করব।’ তিনি বলেন, এই কমিশনের মাধ্যমে আইনানুগভাবে যারা এই হত্যাকাণ্ডের কুশীলব ছিল, যারা নেপথ্যে থেকে লাভবান হওয়ার জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের চিহ্নিত করে জনগণের সামনে মুখোশ উন্মোচন করে দেয়া হবে।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যাতে সঠিক ইতিহাস জানতে পারে, কারা মীরজাফর, বেইমান, নিমক হারাম সেটা জানতে পারে সেজন্য কমিশনের মাধ্যমে যারা পেছনে ছিল, যারা নেপথ্যে থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের পরিচয় জনগণের সামনে উন্মোচন করা হবে। শেখ হাসিনার সরকারের অঙ্গীকার বাংলাদেশে যতক্ষণ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর খুনিদের এনে বিচারের রায় কার্যকর করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের ধরে আনার প্রচেষ্টা চলবেই।
তিনি আরো বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরার পর বঙ্গবন্ধুর আদর্শ পুনর্প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম প্রস্তুত করার পর ১৯৯৬ সালে প্রথমবার নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের হত্যার বিচারের ব্যাপারে খুনি মুশতাক যে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স পাস করেছিল সে অর্ডিন্যান্স বাতিল করে। খুনি মুশতাক, খুনি জিয়াউর রহমান এবং অন্যরা এতই ভীতু ছিল তারা নিজেরা যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে সে ব্যাপারে জনগণকে প্রমাণ করার জন্য একটা আইন পাস করে। সে আইনটা বলে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারকে হত্যা করা হয়েছে সেটার বিচার হতে পারবে না। আমার তো মনে হয় জঙ্গলের পশুরাও এমন আইন করে না।
মন্ত্রী বলেন, এই আইনের মাধ্যমে প্রমাণ পায় খন্দকার মুশতাক, জিয়াউর রহমান এবং অন্যরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র এবং হত্যাকারী ছিল। ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা সংসদে এই আইন বাতিল করার পর জাতির পিতা ও তার পরিবারের ১৭ সদস্যের হত্যার বিচারের পথ সুগম হয়।
তিনি আরো বলেন, অত্যন্ত লজ্জার ব্যাপার বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যার দেশে ফিরে এসে আইন বাতিল করে বিচার শুরু করতে হয়। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর কাছে চিরকাল ঋণী আছি এবং থাকব, তারা কিন্তু সেদিন আমাদের দায়িত্ব পালন করে নাই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভূইয়া, পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ জামশেদ শাহ প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ