ঢাকা, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৪ কার্তিক ১৪৩১, ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

প্রতারণাই ওদের পেশা, গ্রেফতার ৬

প্রকাশনার সময়: ১৫ আগস্ট ২০২১, ২১:৫৮ | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২১, ২২:০৪

সরকারি চাকরির নামে প্রতারণা করার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

তারা হচ্ছেন মো. ফিরোজ, আব্দুল কুদ্দুস, মাঈনুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, তৌকির আহমেদ ও কফিল উদ্দিন চৌধুরী।

১৪ আগস্ট গ্রেফতারকৃতরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্র, সুখী পরিবার, মা ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্র, অ্যাপোলো কনজিউমার প্রোডাক্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে লোভনীয় বেতনে সরকারি চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিল বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

রোববার দুপুরে রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় পিবিআইর অর্গানাইজড ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান জানান, শনিবার মোহাম্মদপুর থানায় চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ফজলুল করিম নামে এক ভুক্তভোগী। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

তারা দেশের প্রথম সারির কিছু পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিত। এক্ষেত্রে তারা মহাখালীতে স্বাস্থ্য বিভাগের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমিউনিটি কেন্দ্রের প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহার করত। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কিছু ইমেল অ্যাড্রেস দেয়া থাকত। যেগুলোতে আগ্রহীরা সিভি পাঠাতেন। সিভি পাওয়ার পর চাকরিপ্রার্থীকে একটি এসএমএসের মাধ্যমে চাকরি হয়েছে বলে একটি কনফার্মেশন পাঠাত। এরপর বিকাশের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন বাবদ ১৯৪০ টাকা নিত।

পিবিআই কর্মকর্তা আরো বলেন, টাকা পাঠানোর পর চাকরিপ্রার্থীকে এই প্রতারক চক্র একটি মানি রিসিট, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ও চূড়ান্ত নির্বাচিত হওয়ার ফরম ইমেইলে পাঠাত। তাদের কথামতো চূড়ান্ত নির্বাচিত ফরম পূরণ করে প্রতারকদের দেয়া ইমেইলে ফিরতি মেইল করতে হতো চাকরিপ্রত্যাশীদের। এরপর ডিজিটাল আইডি কার্ড দেয়ার কথা জানাত প্রতারকরা।

তিনি বলেন, বিনামূল্যে ল্যাপটপ ও মেডিকেল ইকুইপমেন্ট দেয়া হবে সেজন্য দ্বিতীয় দফায় আরো ৪ হাজার ৮০ টাকা দাবি করত চক্রটি। আবারো টাকা পাঠানোর পর চাকরিতে যোগদানের জন্য চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এক পর্যায়ে ওই নম্বরে আর সংযোগ পাওয়া যায় না। ততক্ষণে ভিকটিম বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে অন্তত পাঁচ হাজার টাকা নিত চক্রটি।

পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারোয়ার জাহান বলেন, তারা এ পর্যন্ত কতজনের সঙ্গে প্রতারণা করেছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য না পাওয়া গেলেও প্রতারকদের দুটি বিকাশ নম্বরে গত তিন মাসে ১২ লাখ টাকা এসেছে। যা থেকে ধারণা করা যায় তারা কত মানুষকে প্রতারিত করেছে।

তিনি বলেন, সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পত্রিকায় বিজ্ঞাপন শাখার কেউ এই প্রতারণায় জড়িত কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপানোর আগে ন্যূনতম যাচাই করা প্রয়োজন। তাহলে আর প্রতারকরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারত না। ভালো পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে মানুষ আশ্বস্ত হয়। বিজ্ঞাপন-সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। যেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। গ্রেফতারদের মোহাম্মদপুর থানার মামলায় রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ