জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
১৯৭৫ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু, তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে কিছু পথভ্রষ্ট সেনাসদস্য নির্মমভাবে হত্যা করে। চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহম্মদ ইমরান সকালে জাতীয় সংগীত বাজানোর মাধ্যমে পতাকা উত্তোলন করেন।
পরে মিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে হাইকমিশনার বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
ভারতের রাজধানীতে অবস্থানরত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) নয়াদিল্লি ব্যুরো চিফ এবং বাংলাদেশ বিমান কর্মকর্তারাও তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মহান এই নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে চ্যান্সারির বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান ও বাংলাদেশ মিশনের মিনিস্টার (প্রেস) শাবান মাহমুদ। মিনিস্টার (রাজনৈতিক) নুরাল ইসলাম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের বার্তাও পাঠ করে শোনানো হয়।
বঙ্গবন্ধুকে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মুহাম্মদ ইমরান বলেন, আন্তর্জাতিক মর্যাদা, মহানুভবতা, পরোপকার এবং সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধুকে গত শতাব্দীর একজন কিংবদন্তি নেতা করে তুলেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কূটনৈতিক ফ্রন্ট ও বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সফল ছিলেন; কারণ তিনি তার জীবদ্দশায় বিশ্বের বেশিরভাগ ক্ষমতাধর দেশসহ ১১৫টিরও বেশি দেশ থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
হাইকমিশনার বঙ্গবন্ধুর জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে আরো গবেষণার ওপর জোর দেন, যাতে নতুন প্রজন্ম সেই মহান মানুষের কথা জানতে পারে, যিনি তার নিজের জীবনের চেয়ে দেশবাসীকে বেশি ভালোবাসতেন এবং কীভাবে তিনি বাংলাদেশের নিপীড়িত জনগণের উন্নতির জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে দেশের আরো উন্নয়নে কাজ করার আহবান জানান।
পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং বাংলাদেশের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া বাংলাদেশ হাইকমিশন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চ্যান্সারি প্রাঙ্গণে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে হাইকমিশন ‘বঙ্গবন্ধু, অমর কিংবদন্তি’ শিরোনামে একটি স্মারকও প্রকাশ করে।
কলকাতা ও মুম্বাইয়ে উপ-হাইকমিশন এবং আসামের গুয়াহাটি ও ত্রিপুরার আগরতলা সহকারী হাইকমিশনে একই ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ