ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তৃতীয় ভেন্যুর খোঁজে বিএনপি

প্রকাশনার সময়: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:৫৪

আগামী ১০ ডিসেম্বর শনিবার ঢাকায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। বিপত্তি বাধে সমাবেশস্থল নিয়ে। ২৬ শর্তে সরকার ও পুলিশ অনুমতি দিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। কিন্তু বিএনপির পছন্দ নয়াপল্টন। এরপর থেকেই আলোচনা সমাবেশ হবে কোথায়? প্রশাসন ও বিএনপির তাদের জায়গায় ‘অনড়’। নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে না দিলে, পুলিশের দেয়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও যাবে না বিএনপি। দলটি বলছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিকল্প ভেন্যুর প্রস্তাব পেলে ভেবে দেখবে বিএনপি। তৃতীয় কোনো ভেন্যুতে ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ হতে পারে। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা তুরাগ নদীর তীর ব্যতিত হতে হবে। যদিও সমাবেশস্থল নির্ধারণ নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করেননি দলটি। এই অবস্থায় পুলিশের সঙ্গে আবারো আলোচনায় বসেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিকল্প প্রস্তাব দিলে বিবেচনা করবেন। তবে সেটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা তুরাগ তীর নয় বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, বিকল্প সেই ভেন্যু খুঁজতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম-সচিব মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ এবং প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠক করেন। রোববার (০৩ ডিসেম্বর) বিকেলে সমাবেশের স্থান নির্ধারণে ফের পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিএনপি নেতারা।

বৈঠকে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি। এ সময় নেতাকর্মীদের ওপর বাড়িতে বাড়িদে পুলিশি হয়রানি ও গ্রেফতার বন্ধের অনুরোধ জানানো হয়।

বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। তারা আমাদের কাছে তৃতীয় ভেন্যু চেয়েছে। তবে তাদের পক্ষ থেকে ভেন্যু হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জায়গার নাম প্রস্তাব করা হয়নি।

তিনি বলেন, তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে তারা সমাবেশ করতে রাজি নয়। এই মুহূর্তে আমাদের হাতে তৃতীয় কোনো ভেন্যু নেই। এ বিষয়টি বিএনপির প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে।

আলোচনা শেষে ডিএমপির সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি নয়াপল্টনে সমাবেশ করব। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আমাদের একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়ে চিঠি দিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে আজ আলোচনা করতে এসেছিলাম। আমাদের বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী ও পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আলোচনা করে এ বিষয়ে ঠিক করতে বলা হয়েছে। ভেন্যুর বিষয়ে আলোচনা করবেন তারা। সোমবার (আজ) থেকে এ আলোচনা চলতে পারে। তারপরই ঠিক হবে ভেন্যু।

ঢাকায় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে দাবি করে তিনি বলেন, আমরা দেশের বিভাগীয় শহরে ৯টি সমাবেশ করেছি। কোথাও কোনো ঝামেলা হয়নি। ঢাকায়ও হবে না। তারপরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এসব গ্রেপ্তার সমাবেশের জনসমুদ্র থামানোর জন্য করা হচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এমন গ্রেফতার ও হামলা করা হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলন, বিএনপি কোনো জঙ্গি সংগঠন না। পুলিশ জঙ্গি ধরুক। আমরা তো জঙ্গি নয়। ৩০ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ৭৫০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা সবাই আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। তারপরও তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব বিষয় আমরা ডিএমপি কমিশনারকে বলেছি, এসব গ্রেফতার অভিযান বন্ধ করতে হবে।

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যে কোনো স্থানে সমাবেশ করবো এটা আমার সাংবিধানিক অধিকার, এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেখানে আগ বাড়িয়ে নাশকতা হবে বলে আমার সাংবিধানিক অধিকারকে আপনারা লঙ্ঘন করছেন কেড়ে নিচ্ছেন। আমরা ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করব সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করছেন। দয়া করে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করবেন না। আমরা যে নয়টি সমাবেশ সম্পূর্ণ করেছি ঠিক একইভাবে ঢাকার সমাবেশ সম্পূর্ণ করব।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ