গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি), একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৫ পুলিশ কর্মকর্তা, একজন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, ১২৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ মোট ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য ১২৫ প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণকারী বা নিয়োগকারী দপ্তরকে এক মাসের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে তা নির্বাচন কমিশনে পত্র মারফত জানাতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
৯৪ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা উদয়ন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. সাইফুল ইসলামকে চাকরি থেকে দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
সিইসি বলেন, ‘একইভাবে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার ২ নম্বর কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী উপপরিদর্শক (এসআই) তরুণ কুমার, ৫৪ নম্বর কেন্দ্রের এসআই মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, ৫৯ নম্বর কেন্দ্রের এসআই মো. আনিছুর রহমান, ৬২ নম্বর কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী সাদুল্যাপুর থানার এসআই কনক রঞ্জন বর্মন ও ১০৫ নম্বর কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী পঞ্চগড়ের আটোয়ারী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. দুলাল হোসেনের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা তথা অসদাচারণের কারণে চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে তাদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে পত্র দিব। কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে কমিশনকে এক মাসের মধ্যে অবহিত করবে।’
সিইসি আরও বলেন, ‘অসদাচারণের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুশান্ত কুমার সাহার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে এক মাসের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনে জানাবে।’
সিইসি জানান, নির্বাচনে অনিয়মের ঘটনায় দায়ী এজেন্টদের পরবর্তীতে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। সব কেন্দ্রের এজেন্টদের নামের তালিকা সীলকরা অবস্থায় রয়েছে। সেখান থেকে গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এ তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অবৈধ আদেশ পালন করায় ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে পত্র প্রদান করা হবে বলেও জানান সিইসি। তদন্ত প্রতিবেদনে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের নাম না থাকায় শুধু মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়। এ আসনের পুন:নির্বাচন যথাসময়ে ব্যবস্থা করা হবে বলে জানায় নির্বাচন কমিশন।
এর আগে গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোটে প্রার্থীদের এজেন্টের অনিয়ম পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। গত ১৬ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, ‘বুথে ঢুকেছে, কোথাও কোথাও বাটন টিপে দিয়েছে। এগুলো দেখেছি। এগুলো তো একেবারেই অসত্য নয়। আইনে প্রার্থীদের লোক করা মানে তো প্রার্থীর করা। প্রার্থীর এজেন্ট মানেই প্রার্থী। একই তো কথা। প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টের অপরাধ প্রার্থীর ওপর বর্তায়।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ