আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের আহ্বানে কিছু বাংলাদেশি ঘর ছেড়ে ‘হিজরতে’ বেরিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
শনিবার (১৪ আগস্ট) বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সমগ্র পৃথিবী এখন সাইবার ওয়ার্ল্ডে বন্দি। জঙ্গিরাও একই মিডিয়ায় তাদের রিক্রুট এবং উদ্বুদ্ধ করছে। সম্প্রতি তালেবানরা আফগানিস্তানে যুদ্ধে যেতে আহ্বান জানিয়েছে। আর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিছু মানুষ হিজরতে (ঘর ছেড়ে) বেরিয়েছে। তাদের মধ্যে কিছু গ্রেফতার হয়েছে ভারতে, আর কিছু পায়ে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করছে।’
জঙ্গিদের বিষয়ে সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা থেমে নেই এটা বলা যায়। আমরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাতে কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটে।’
চলতি মাসে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত পরশু অনলাইনে বোমা তৈরির লিডিং পর্যায়ের জঙ্গি সংগঠনের একজনকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। সে বোমা বিশেষজ্ঞ ও অনলাইনে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ দিত। তারা ধাপে ধাপে উন্নতি করছিল, এই পুরো গ্যাংটাকে আমরা গ্রেফতার করতে পেরেছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, জঙ্গিদের প্রধান টার্গেট হলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করা। এ জন্য ১৫ আগস্টকে তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।
তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট অনুষ্ঠানস্থল না হলেও ২ কিলোমিটারের মধ্যেও যদি জঙ্গিরা কোনো ঘটনা ঘটাতে পারে, তাহলে তারা আন্তর্জাতিক মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে। আমরা মনে করি না এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে।’
‘তবে কোনো ধরনের আশঙ্কা আমরা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছি না, শঙ্কা রয়েছে। আমরা যেকোনো ধরনের ঘটনা এড়াতে সর্বোচ্চ মেধা দিয়ে চেষ্টা করছি।’
১৫ আগস্টের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ধানমন্ডি ৩২ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা প্রত্যেককে হ্যান্ড মেটাল ডিটেকটর দিয়ে তল্লাশি করে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তল্লাশি, ব্লক রেইড, চেকপোস্টের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে গোয়েন্দা নজরদারি এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সুইপিং করা হয়েছে ডগ স্কোয়াড ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট দিয়ে। ধানমন্ডি ৩২ ও বনানী কবরস্থান কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানস্থল ও তার আশপাশের এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থাকবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এরপর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রবেশ করবেন। এটা যেহেতু আবেগের জায়গা তাই, জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।’
১৫ আগস্টের কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে দোয়া চেয়েছেন মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই তবুও সবাই আগামীকালের অনুষ্ঠানের জন্য দোয়া করবেন।’
একই সঙ্গে করোনা মহামারির কারণে জনসাধারণকে সেলফি না তোলার অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।
নয় শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ