নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানিয়েছেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগ নিজেদের কাছে রাখতে এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে এনআইডি নিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন একটি আইন করা হচ্ছে। এর আগে মন্ত্রিপরিষদ থেকে এনআইডি হস্তান্তর করার জন্য ইসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে এনআইডি নিজেদের কাছে রাখার সুবিধা তুলে ধরে পাল্টা চিঠি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে তার কোনো জবাব না মিললেও নতুন আইন প্রণয়নের দিকেই যাচ্ছে সরকার। এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
মো. আলমগীর বলেন, এ ব্যাপারে তো নতুন পদক্ষেপ নেই। আমি যতটুক জানি কর্মকর্তাদের সমিতি থেকে আবেদন দিয়েছিল। আমরা বলেছি যে সেটা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবো। কমিশন সবার কাছে সবকিছু পাঠাতে পারে না। নিয়মকানুন আছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়ে দেবো। তার অনুলিপি হয়তো সুরক্ষা বিভাগে পাঠাবো। এটুকুই সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
তিনি বলেন, ১০-১২ দিন আগের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে আমরা বলবো যে কর্মকর্তারা বিষয়টি আবেদন করেছেন। তাদের এ বিষয়টির বিবেচনার করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। কমিশনে থাকবে, না ওখানে চলে যাবে বিষয়টাই বিবেচনার জন্য বলা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এ ইসি সচিব বলেন, আমরা কথা বলেছি। কথা বলেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা এখানে থাকার কতগুলো ভালো দিক আছে। আবার জিনিসটা হলো সরকারের জিনিস। আমাদের কাছে দিয়ে রেখেছিলেন, এখন সরকার নিয়ে যেতে চান, প্লাস, মাইনাস অনেক বিষয় আছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যেহেতু রাষ্ট্রের প্রধান, আমাদের গার্ডিয়ান, সরকারেরও গার্ডিয়ান; কাজেই আমরা উনার কাছেই পাঠিয়ে দিই উনি যেটা ভালো মনে করেন, সেটাই হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রধান হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। উনিও অনেক বিষয় মহামান্য রাষ্ট্রপতি সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। কাজেই আমরা মহামান্যের কাছেই পাঠিয়ে দেবো। উনি যেটা ভালো মনে করেন, সেটাই করবেন। উনি যেটা ভালো মনে করবেন, সেটার সঙ্গেই আমরা একমত হবো।
মো. আলমগীর বলেন, একটা জিনিস বুঝতে হবে। জিনিসটা হচ্ছে সরকারের। কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিশন এটা সফলতার সঙ্গেই করেছে। এখন সরকার মনে করেছেন উনাদের কাছে নিয়ে যাবে। আমরাও চাইবো আমাদের কাছে থাকুক। কমিশন তো পক্ষ হতে পারে না। তাই রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটাই হবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, এনআইডি হলো সরকারের। আইন করে আমাদের দায়িত্ব দিয়েছিল। এখন আইন করে যদি নিয়ে যেতে চায় তাহলে আমাদের বাঁধা দেওয়ার কিছু নেই। তবে সরকার এটা নিতে চাইলে আলাদা লোকবল এবং টেকনিক্যাল অবকাঠামো করতে হবে। সেটা সরকারের জন্য অবশ্যই খরচের ব্যাপার আছে, চ্যালেঞ্জের ব্যাপার আছে এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আমাদের ধারণা সরকার নিতে চাইলেও সময় লাগবে। এতো তাড়াতাড়ি নিতে পারবে না। কারণ একটা সিস্টেম থেকে আরেকটা সিস্টেমে নিয়ে যাওয়া এটা বেশ সময় লাগবে। সংসদে আইন পাশ করতে যেমন সময় লাগবে। বাস্তবে ট্রান্সফার করতেও বেশ সময় লাগবে।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ