চ্যালেঞ্জ ও পাল্টা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলছে সংসদের বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদের ডাকা জাতীয় পার্টির (জাপা) ১০ম কাউন্সিল। এরই মধ্যে সম্মেলন সফল করতে ঢাকা মহানগরে তিনটিসহ দেশজুড়ে প্রায় ২৫ টিরও বেশি সাংগঠনিক জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটিতে জায়গা করে নিচ্ছেন পার্টির দীর্ঘ সময়ের পরিক্ষীত-ত্যাগী ও অবহেলিত নেতারা। সঙ্গে যোগ হচ্ছেন নতুন-পুরাতন নেতারাও। সেই ধারাবাহিকতায় রওশন এরশাদের ডাকে সাড়া দিয়ে জাতীয় পার্টির সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার মিলনের নেতৃত্বে দলে যোগ দিচ্ছেন বিএনপি, এলডিপি ও বিকল্পধারার অর্ধশতাধিক নেতা।
যোগদানের তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক এক পররাষ্ট্র সচিব। এছাড়াও তালিকায় আছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, সামরিক কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সেবা সংস্থার নেতারাও।
যোগদানের সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছেন- জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুল হক হাফিজ, চাকসুর সাবেক ভিপি ও বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক জাপা নেতা মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত সচিব ড. রফিকুল ইসলাম মাহমুদ, চায়না বাংলা ফ্রেন্ডশীপ সেন্টারের সিরিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গুলজার হোসেন, বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থার (বাইসস) সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান রকীব আজাদ, মহাসচিব এম সাইফুল ইসলাম মোয়াজ্জেম প্রমূখ। এদের সঙ্গে বিএনপি, এলডিপি ও বিকল্পধারার আরো বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতারও যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতা, নারী সংগঠকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পেশাজীবী এবং রাজনৈতিক নেতাও বেগম রওশন এরশাদের ডাকে সাড়া দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগদানের অপেক্ষায় রয়েছেন। বিরোধী দলীয় নেতা দেশে ফিরলেই তারা আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
জাপায় যোগদান প্রক্রিয়ায় থাকা নেতৃবৃন্দ গোলাম সরোয়ার মিলনের নেতৃত্বে নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে কয়েক দফায় বৈঠক করেছেন পার্টির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির দুজন যুগ্ম আহবায়কের সঙ্গে। সাবেক ছাত্রনেতাদের দলে ফিরিয়ে আনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক কাজী মামুনুর রশীদ। তদারকি ও সমন্বয় করছেন কমিটির আরেক যুগ্ম আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু।
এ বিষয়ে টিটু বলেন, জাতীয় পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পল্লীমাতা বেগম রওশন এরশাদ দল শক্তিশালী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান করেছেন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে অনেকেই যোগাযোগ করছেন। পার্টির সাবেক নেতারাও আছেন, যারা অতীতে দল ছেড়ে গেছেন। অন্যান্য দলের জনপ্রিয় অনেক নেতাও রওশন এরশাদের আহবানে সাড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। যারা কমবেশি ম্যাডামসহ আমাদের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এদের অনেকেই সম্মেলনের আগে অথবা পরে যোগ দেবেন। তবে যাদের নাম আপাতত শোনা যাচ্ছে, তারা শিগগিরই পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন বলেও জানান টিটু।
দলে ফিরে আসা প্রসঙ্গে গোলাম সরোয়ার মিলন বলেন, ম্যাডাম রওশন এরশাদ আমাদের মায়ের মতো। তার স্নেহ মমতায় রাজনীতি করেছি। দেশের প্রয়োজনে জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করতে তিনি (রওশন এরশাদ) যে ডাক দিয়েছেন, তাতে সাড়া দেয়া অনেকটা নৈতিকতার মধ্যে পড়ে। যেমনটা ঘরের ছেলে ঘরে ফেরা। মা সন্তানকে ঘরে ফিরতে বলেছেন, আর ছেলে সেই ডাকে সাড়া দেবে না, এটা হতে পারে না। তবে এখনও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আলাপ আলোচনা চলছে, ম্যাডাম (রওশন এরশাদ) দেশে ফিরলেই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।সাবেক ছাত্রনেতাদের পার্টিতে ফেরা প্রসঙ্গে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, অনেকেই যোগাযোগ করছেন, পুরাতনরা ফিরতে চাচ্ছেন। বিএনপিসহ ছোট-বড় দলের অনেক জনপ্রিয় নেতা মাড্যামের নেতৃত্বে রাজনীতি করতে চাচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ম্যাডাম দেশে ফিরলেই আগ্রহীরা অনেকে দেখা-সাক্ষৎ করবেন। তখন বড় ধরনের একটি যোগদান হতে পারে।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ