ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

হামলার শিকার বিএনপির কেন্দ্রীয় ৫ নেতা, ফখরুলের নিন্দা 

প্রকাশনার সময়: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২৩:৩২

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও দলের তিন কর্মী নিহতের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে অতর্কিত হামলার মুখে পড়েছে বিএনপি। এতে দলের কেন্দ্রীয় পাঁচজন নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানী ও বিকেলে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে পৃথক এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহতরা হলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।

এর আগে শনিবার বিকেলে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার বাজারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ওপর অতর্কিত হামলা হয়। ওই ঘটনায় তার স্ত্রী শামীমা বরকত লাকিসহ বেগমগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব মহিউদ্দিন রাজুও গুরুতর আহত হয়েছেন।

এছাড়া একইদিন সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানীর বনানীতে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিসহ পুলিশের গুলিতে ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে তিনজন নিহতের প্রতিবাদে মোমবাতি জ্বালিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় অতর্কিত হামলায় কেন্দ্রীয় চার নেতা আহত হয়েছেন।

এর আগে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই স্বৈরাচারী সরকারকে যদি হটাতে হয়, তাহলে রাস্তায় তার ফয়সালা করতে হবে। সেই লক্ষ্যে বিএনপি আন্দোলন করছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, জনগণকে সাথে নিয়ে এ আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়া হবে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্যের আগে থেকেই বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রাস্তা দখলে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন। এর উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজকে কীভাবে আওয়ামী লীগ এ আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করছে অর্থাৎ এই যে জনগণের দুর্ভোগ, এই দুর্ভোগে তারা বিচলিত নয়। তারা দুর্ভোগ সৃষ্টি করার পক্ষে মিছিল করছে, আমাদের বাধা দিচ্ছে।

কোনো বাধা এ দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে রুখতে পারেনি বলে উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা এ সরকারের হাত থেকে এই দেশকে রক্ষা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।

এদিকে বনানীতে বিএনপির মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি এবং কুমিল্লায় ভাইস-চেয়ারম্যান বরকতুল্লা বুলুর ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে পৃথক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শনিবার রাত ৮টায় বনানীতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি শেষে পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ।

এছাড়াও ঢাকা আসার পথে মনোহরগঞ্জে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে আওয়ামী গুন্ডাবাহিনী। বরকত উল্লাহ বুলু এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বনানীর হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, তাবিথ আউয়াল এবং হেনা আলাউদ্দিন, এ্যাডভোকেট রুনা, মহিলা দলসহ বনানী থানা ছাত্রদল ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। এধরণের বর্বরোচিত হামলার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, এই হামলা সরকারের ওপর মহল থেকেই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী দল যাতে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম বেগবান করতে না পারে সেজন্য নেতাকর্মীদেরকে ভয় পাইয়ে দিতেই সরকারের এই মরণঘাতি হামলা। সরকার একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনকে চিরস্থায়ী করার জন্য রক্ত ঝরানোর নীতি গ্রহণ করেছে।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ