আবারো অস্থিরতা দেখা দিয়েছে সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টিতে (জাপা)। দীর্ঘদিন ধরে রোগ শোকে কাতর পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ ও তার ভাই জিএম কাদেরের মধ্য দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় দলটিতে এমন অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে।
তিন বছর আগে এরশাদের মৃত্যুর পর বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে একাংশ সংসদের নেতৃত্ব দিতে থাকেন রওশন এরশাদ। কিন্তু মৃত্যুর আগে এরশাদ তার ছোট ভাই জি এম কাদেরকে দলের নেতৃত্ব দিয়ে যান। এরপর জি এম কাদের তার ভাবিকে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক করেন। পাশাপাশি তিনি জাতীয় সংসদে হন বিরোধীদলীয় উপনেতা।
এদিকে হঠাৎ করে রওশন এরশাদকে সরিয়ে জি এম কাদেরকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। বিরোধীদলীয় নেতার পদে জি এম কাদেরকে মনোনয়ন দিতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠিও দিয়েছে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল।
বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনের মাগরিবের নামাজের বিরতিকালে চিঠিটি স্পিকারের দপ্তরে জমা দেয়া হয়। পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি দল এই চিঠি জমা দেন।
এ প্রসঙ্গে মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা অনেকদিন ধরে অসুস্থ। তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে সংসদেও ঠিকমত আসতে পারছেন না। এজন্য সংসদীয় দল এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যগত বিষয় দেখিয়ে রওশন এরশাদকে বাদ দিয়ে জিএম কাদেরকে বিরোধী দলীয় নেতা করার প্রস্তাব দেয়া হলেও মূলত এক দিন আগে দলের পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ দলের কাউন্সিল ডাকায় ক্ষুব্ধ হন দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তার নির্দেশেই দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠক ডেকে রওশন এরশাদকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংককে চিকিৎসাধীন রওশন এরশাদ। গত জুন মাসে কয়েক দিনের জন্য দেশেও আসেন। সেই সময় দলের কর্তৃত্ব নিতে নানান কর্মকাণ্ড করেছিলেন। তবে সেটা কার্যত ব্যর্থ হয়। ওই সময় রাজধানীর একটি হোটেলে মতবিনিময় সভা করে তিনি অভিযোগ করেন, অসুস্থতার সময়ে দলীয় নেতাদের কেউ তার খোঁজখবর নেয়নি। আর এরশাদের মৃত্যুর পর দলটিও এলোমেলো হয়ে পড়েছে।
জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি আবারো বিদেশে ফেরত যান। এরপর গত বুধবার রাতে তার নামে আসা চিঠিতে আগামী নভেম্বরে দলের কাউন্সিল ডাকা হয়।
এরপর জিএম কাদেরের পক্ষে তার প্রেসসচিব বিবৃতি দিয়ে বলেন, জাতীয় পার্টিতে চেয়ারম্যান ছাড়া আর কারো কাউন্সিলর ডাকার এখতিয়ার নেই। রওশনের ওই পদক্ষেপ অবৈধ। এর আগের পার্টির কর্তৃত্ব নিয়ে দেবর-ভাবির বিরোধে দলটি ভাঙনের মুখে পড়েছিল।
-----
আগস্টে রেমিট্যান্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছেবৈদেশিক মুদ্রা সংকটে প্রবাসী আয় বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া বিভিন্ন ছাড় ও সুবিধার সুফল মিলছে। সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ২ দশমিক ০৩ (২০৩ কোটি ৭৮ লাখ) বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাইতে অভিবাসী শ্রমিকরা ২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছিল।
জুলাইতে রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ২০২১-২২ অর্থবছরের আগস্টে ছিল ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চলতি ২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্সন্স আহরণ করেছে, যা ২১ অর্থবছরে আহরিত ২৪ দশমিক ৭৭ মার্কিন ডলারের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের রেমিটেন্স প্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আশার আলো দেখালেও ক্রমবর্ধমান আমদানি চাহিদা মেটানো কঠিন হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে আগ্রহ তৈরিতে প্রক্রিয়াগুলোকে সহজীকরণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি বলেন, সরকার রেমিটেন্স প্রণোদনার পাশাপাশি নীতিগত সহায়তা প্রদান করছে। এখন ডলারের মূল্যহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই খাত সংশ্লিষ্টরা বলছে, বৈশ্বিক মহামারী পরবর্তী বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি ও চাকরির সুযোগ ও রেমিটেন্স প্রবাহ গত অর্থবছরের তুলনায় আরো বৃদ্ধি পাবে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ