নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ এবং গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারাদেশে বাম জোটের ডাকা আধাবেলা হরতাল চলছে। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ হরতাল চলবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে হরতাল সমর্থনে রাজধানীর বিজয় নগর , পল্টন, প্রেসক্লাব ও গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট এলাকায় হরতালের সমর্থনে বাম জোটের নেতাকর্মীদের মিছিল করতে দেখা গেছে। এসব এলাকায় অন্যান্য দিনের চেয়ে অতিরিক্ত পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।
এছাড়া পল্টন মোড়ে বাম জোটের কিছু নেতাকর্মীকে সড়কে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে। এছাড়াও পল্টনের সড়কে কয়েয়বার যানচলাচল বন্ধ করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে হরতাল সমর্থকদের। যদিও এই এলাকায় যানবাহন চলাচল করছে।
অন্যান্য দিনের মতো ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলেছেন এবং অফিস খোলা থাকায় মানুষ বিনাবাধায় অফিসে যাচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহন চলছে। সকালে যানবাহন কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সারাদেশে হরতাল পালন করা হচ্ছে। জনগণ এই হরতালে সমর্থন দিচ্ছে। বাসমালিকরা জোর করে পরিবহন শ্রমিকদের বাস দিয়ে নামিয়েছে। পুলিশ হরতাল পালনে বাধা দিচ্ছে।
এদিকে হরতালে নাশকতা এড়াতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া মোড়ে মোড়ে পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এসব এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এর আগে, হরতালের সমর্থনে বুধবার (২৪ আগস্ট) রাতে রাজধানীর পল্টন মোড়ে বাম জোটের হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করাসহ রাস্তায় গাড়ির টায়ারে অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় চারজনকে আটক করা হয়। অন্যদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
গণমাধ্যমে পাঠানো দলটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জ্বালানি তেল, ইউরিয়া সার, খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম, পরিবহন ভাড়া কমানো এবং বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে হরতালের ডাক দেয়া হয়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোট এ হরতাল আহ্বান করেছে। এতে ৯ সংগঠনের সমর্থন রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বেশ কিছুদিন ধরে এ নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। সেসবে সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনও পাওয়া গেছে। তারা তাদের কষ্টের কথাও তুলে ধরেছেন।
তবে এসব করতে গিয়ে সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়েছে দলটি। তবু সাহসের সঙ্গে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। ফলশ্রুতিতে কাল ‘দাম কমাও, মানুষ বাঁচাও’ স্লোগানে সারাদেশে হরতাল পালিত হবে।
তাতে জানানো হয়, বর্তমান সংকটে দায়িত্বশীল আচরণ না করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েই চলেছে সরকার। এতে জনসাধারণের নাভিশ্বাস উঠছে। ইতোমধ্যে চাল, তেল, সারের দাম বাড়ানো হয়েছে।
এ অবস্থায় পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা চলছে। ফলে শুধু বামপন্থীদের জন্য নয়, জনসাধারণের বেঁচে থাকার দাবির হরতাল এটি।
তবে এ হরতাল চলাকালে জরুরি সেবাদানকারী যানবাহন-অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, লাশ বহনকারী ও গণমাধ্যমকর্মীর গাড়ি চলাচল করবে। এছাড়া ওষুধের দোকান, খাবার হোটেল এ কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ