রাজশাহীতে একদিনের ব্যবধানে করোনা ভাইরাস শনাক্তের হার দ্বিগুন বেড়েছে। রাজশাহীর দুটি আরটি পিসিআর ল্যাবের রিপোর্ট অনুযায়ী করোনা শনাক্তের হার গত মঙ্গলবার ছিল ২১.৭ শতাংশ একদিনের ব্যবধানে বুধবার তা বেড়ে ৪২ শতাংশ হয়। বুধবার রাতে জেলায় শনাক্তের হার দ্বিগুন বৃদ্ধির তথ্য জানানো হয়। এদিকে বিশেষ লকডাউনের কারণে নানা কৌশলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মানুষ রাজশাহী আসছেন। রাজশাহী হয়ে তাঁরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে। এতে সারাদেশেই করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজশাহীতেও কঠোর লকডাউন দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক জরুরি সভায় তিনি এই মত দেন।
রামেক সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর দুটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার পর গত ২৪ ঘন্টায় ১৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে রাজশাহীর ৮৩ জন। বুধবার রাতে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও রামেক হাসপাতালের দুটি ল্যাবে ৩৫২ জনের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহীর ১৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৩ জন ও নওগাঁর ৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়া বিদেশগামী ৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১ জনের দেহে করোনা সনাক্ত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ৭২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ জনের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। এছাড়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ২৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০৮ জনের পজেটিভ হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (আরএমসি) ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (আরএমসিএইচ) দুই আরটি পিসিআর পরীক্ষাগারের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা যায়।
এদিকে, গত সোমবার থেকে এক সপ্তাহের লকডাউনে থাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জে শনাক্তের হার কমে এসেছে। এ জেলায় গত মঙ্গলবার শনাক্তের হার ৬২ শতাংশ থেকে বুধবার ৫৮ শতাংশে নেমে আসে। তবে, এই জেলা থেকে নতুন কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। বৃহস্পতিবার থেকে এখানে নিজস্ব আরটি পিসিআর মেশিনে নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গেছে।
রাজশাহী সদর সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা জানান, ফিডার রোড দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মানুষের রাজশাহী আসা বন্ধ করতে হবে। এ জন্য পুলিশ-প্রশাসনকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে ভাল হয় যদি চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশাপাশি রাজশাহীকেও কঠোর লকডাউনের আওতায় আনা যায়। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা পরিস্থিতির অবনতি শুরু হলে গত ২২ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভায় ফজলে হোসেন বাদশা জেলাটিকে লকডাউনের প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাব হাসপাতালের পক্ষ থেকে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়। এরপরই চাঁপাইনবাবগঞ্জে লকডাউন আসে। রাজশাহীকে লকডাউন করা হবে কিনা সেটি এখন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে লকডাউন আসতে পারে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
বুধবার জরুরি সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। সভায় পুলিশ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সভায় নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ