আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সংগ্রামসহ আমাদের জাতীয় জীবনে যা কিছু মহৎ অর্জন তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বুধবার (২২ জুন) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের হাত ধরেই নির্দেশিত হয়েছে দেশ ও দেশের মানুষের এগিয়ে চলার পথ। একইভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির গতিপথও নির্ণিত হয়েছে জনকল্যাণ ও গণআকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে।’
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভ্রান্ত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা; অতঃপর বাঙালি জাতির উপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, নির্যাতন, চরম অবেহলা ও দুঃশাসনে নিষ্পেষিত বাংলার জনগণের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ।’
‘এ দেশের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভাগ্য বদলের যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরেই। বাঙালির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সাফল্যের রচয়িতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাঙালি তার ভাষার অধিকার পেয়েছে, বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফার সাঁকো পেরিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নভূমিতে পদার্পণ করেছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই জনপদে বিগত ৭৩ বছর ধরে সমাজ-সংস্কৃতি-রাজনীতির সমন্বয় এবং রাজনীতিতে সততা, দেশপ্রেম ও সম্প্রীতির আদর্শকে আওয়ামী লীগ সর্বদা ধারণ করেছে। জনগণের ভেতর থেকে উত্থিত একটি প্রগতিশীল সংগ্রামী রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ হচ্ছে সমাজের অগ্রসর চিন্তা-চেতনা, আদর্শ, লক্ষ্য ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রবাহিনী। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্যের রূপকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতি-রাষ্ট্র ও আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার সুমহান ঐতিহ্যের প্রতীক।’
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র স্বাধীনতাই এনে দেয়নি; অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির শক্তিশালী ভীতও রচনা করেছে। বঙ্গবন্ধুর সরকার শূন্য কোষাগার হাতে নিয়ে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করে পৃথিবীর বুকে অনন্য নজির স্থাপন করেছিল।’
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাসহ জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খুনিচক্র অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর অবর্ণনীয় অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন চালায়; জেল-জুলুম মামলা-হামলা দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষত-বিক্ষত করার অপচেষ্টা চালায়।’
কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটে, বাঙালি জাতি ফিরে পায় তাদের ভোট ও ভাতের অধিকার। গত চার দশকে তার বলিষ্ঠ ও ভিশনারি নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় অনন্য মর্যাদার আসনে অভিষিক্ত হয়েছে। শেখ হাসিনার হাত ধরেই এক সময়ের দরিদ্রকবলিত বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে।’
‘ফলে নিজস্ব অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতুর ন্যায় বৃহৎ ও চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। যার মধ্য দিয়ে একটি সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র বিনির্মাণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার অনন্য নজির স্থাপিত হয়েছে এবং উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনায় পরনির্ভরশীলতা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবো।’
ওবায়দুল কাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনায় প্রণিত অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০২১-২৫), প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০২১-৪১) এবং ব-দ্বীপ পরিকল্পনা (২১০০)-এর আলোকে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে উন্নত-কল্যাণকর সুখি-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ জনপদ।’
নয়া শতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ