অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় দশ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম। বর্তমানে কারা হেফাজতে আছেন তিনি। কেমন কাটছে তার দিন?
২০২১ সালের ৯ মার্চ নিম্ন আদালতের সাজা বহাল রেখে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ের পর গত ২২ মে তিনি আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে, অসুস্থতার কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে আনা হয়। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে এই হাসপাতালেরর কেবিন ব্লকে চিকিৎসা চলছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে, দুদকের মামলায় দণ্ডিত হাজী সেলিম হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তিনি কথাও বলতে পারছিলেন না। পরে তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়।
এদিকে বিএসএমএমইউর সূত্র বলছে, হাজী সেলিমের অবস্থার খুব একটা পরিবতর্ন হয়নি।
হাজী সেলিমের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউর পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘হাজী সেলিম হৃদরোগে আক্রান্ত। তার নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।’
২২ মে হাজী সেলিমের আইনজীবী তার পক্ষে আদালতে তিনটি আবেদন করেন। এর একটিতে আপিলের শর্তে জামিন আবেদন করা হয়। আরেকটি আবেদনে বলা হয়, তাকে যদি কারাগারে পাঠানো হয়, তাহলে যেন প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দেয়া হয়। আর তৃতীয় আবেদনে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসার সুযোগ চাওয়া হয়।
আত্মসমর্পনের পর ওইদিন বিকাল পাঁচটার পর হাজী সেলিমকে নিয়ে পুলিশের পিকআপ ভ্যানটি কারাগারের উদ্দেশে রওনা হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তাকে বহনকারী পুলিশ ভ্যান কারাগারে প্রবেশ করে।
আদালতে আত্মসমর্পণের আগে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ার পরেও গত ২ মে বিদেশে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন এই সংসদ সদস্য। আলোচনার মধ্যে চার দিন পরে তিনি দেশে ফেরেন।
২০২১ সালের ৯ মার্চ হাইকোর্ট হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখে ও অন্য ধারায় তিন বছরের দণ্ড থেকে অব্যাহতি দেয়। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে মামলাটি করে দুদক।
ওই মামলায় ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে তাকে মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলো আদালত। ওই মামলায় সাজা হয়েছিলো তার স্ত্রীর গুলশান আরা সেলিমেরও। পরে তারা আপিল করলে আদালত ২০১১ সালে ওই সাজা বাতিল করে।
পরে দুদক আবার উচ্চ আদালতে আপিল করে। এই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালে হাইকোর্টের রায় বাতিল করে আপিল বিভাগ আবারো হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয়। শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৯ মার্চ হাইকোর্ট দশ বছরের সাজা বহাল রাখে ও অন্য ধারায় তিন বছরের দণ্ড থেকে অব্যাহতি দেয়। আর আপিল চলাকালে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা মারা যাওয়ায় তার আপিল বাতিল করা হয়।
নয়া শতাব্দী/জিএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ