ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

আজ বিশ্ব বন্ধু দিবস

প্রকাশনার সময়: ০১ আগস্ট ২০২১, ০০:৩৭

দেখা হবে বন্ধু, কারণে আর অকারণে দেখা হবে বন্ধু, চাপা কোনো অভিমানে, দেখা হবে বন্ধু সাময়িক বৈরীতায়, অস্থির অপারগতায়!; তুমি আমার পাশে বন্ধু হে বসিয়া থাকো, একটু বসিয়া থাকো, আমি মেঘের দলে আছি, ঘাসের দলে আছি তুমিও থাকো বন্ধু হে একটু বসিয়া থাকো.... এরকম অসংখ্য গান যাকে নিয়ে লেখা হয়েছে সে হলো বন্ধু।

আজ রোববার ১ আগষ্ট বিশ্ব বন্ধু দিবস। প্রতি বছর আগস্ট মাসের প্রথম রোববার আন্তর্জাতিকভাবে বন্ধু দিবস পালিত হয়।

শুধু পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশেই নয়, বরং বাংলাদেশসহ এশিয়ার অনেক দেশেও প্রতিবছর আগস্ট মাসের প্রথম রোববারকে উদযাপন করা হয় বন্ধু দিবস উপলক্ষে।

অন্যান্য দেশের মতো বড় কোনো অনুষ্ঠান না থাকলেও গত প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশে নানা আয়োজনে পালিত হয় দিবসটি। তবে এক্ষেত্রে বয়স্কদের চেয়ে তরুণদের আগ্রহই বেশি। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে দেশের গণমাধ্যমগুলো।

এই দিন মানুষ বন্ধুদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময় কাটায়। পরস্পরকে ফুল, কার্ড, হাতের ব্যান্ড প্রভৃতি উপহার দেওয়া বন্ধু দিবসের রীতি। বন্ধুত্বের ইতিহাস প্রায় মানব সভ্যতারই সমান।

বন্ধু কিংবা বন্ধুত্বের মতো সম্পর্কের সঙ্গে মানুষের পরিচয় যুগ যুগান্তরের। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধু দিবসটি হলমার্ক কার্ডের প্রতিষ্ঠাতা ‘জয়েস হল’ ১৯১৯ সালে প্রথম উত্থাপন করেন আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধুত্ব দিবস। এই দিন তারা সবাই একে অন্যেকে কার্ড পাঠাতেন। পরে ১৯৩৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বন্ধু দিবসের ইতিহাস শুরু।

বন্ধু দিবসের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে যেয়ে অধিকাংশ মানুষই যে ঘটনাটির কথা উল্লেখ করেন সেটি হলো, ১৯৩৫ সালে আমেরিকার সরকার এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। হত্যার প্রতিবাদে পরের দিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। সে সময় বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপর থেকে জীবনের নানা ক্ষেত্রে বন্ধুত্বের অবদান আর তাদের প্রতি সম্মান জানানোর লক্ষ্যেই আমেরিকান কংগ্রেস ১৯৩৫ সালে আইন করে আগস্ট মাসের প্রথম রোববারকে আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস ঘোষণা করে।

আর সেই থেকেই জীবনের নানা ক্ষেত্রে বন্ধুদের অবদান আর আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে আমেরিকান কংগ্রেস ১৯৩৫ সালের আগস্ট মাসের প্রথম রোববারকে বন্ধু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। তখন বেশকিছু দেশ বন্ধুত্ব দিবসের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করে নেয়। এভাবেই বন্ধু দিবস পালনের পরিসর বাড়তে থাকে।

বর্তমানে সারা বিশ্বেই আগ্রহ নিয়ে বন্ধুত্ব দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ বিশ্বময় বন্ধুত্বের আলাদা অবস্থানে নিজেদের নিয়ে যায়। সে বছরটিতে জাতিসংঘ বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র উইনি দ্যা পুহকে বন্ধুত্বের বিশ্বদূত হিসেবে নির্বাচিত করে। বন্ধু দিবসের এই বিশ্বদূত ছাড়াও বন্ধুত্ব দিবসের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে হলুদ গোলাপ আর ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ডের মতো বিষয়গুলোও।

মজার বিষয় হলো, এই ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ডের ধারণাটিও এসেছে আমেরিকা থেকেই। আমেরিকার আদিবাসীদের মধ্যে অনেক আগে থেকেই বন্ধুত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ ব্যান্ড দেয়ার এই রীতি চালু আছে। তারা তাদের বন্ধুদের জন্য ব্যান্ড তৈরি করে। আর যাকে ব্যান্ড দেয়া হয়, সেও কখনোই ব্যান্ডটি খোলে না।

আবার বন্ধুত্বের প্রতীক যে হলুদ গোলাপ সেই হলুদ রং হলো আনন্দের প্রতীক। আর হলুদ গোলাপ মানে শুধু আনন্দই নয়, প্রতিশ্রুতিও। কাজেই বন্ধুত্বের মাঝে যেন আনন্দের পাশাপাশি থাকে প্রতিশ্রুতিও সেই কথাটিই যেন মনে করিয়ে দেয় এই বন্ধু দিবস।

বর্তমান সময়ে পুরো পৃথিবীটাই একটি সমাজে পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তির কল্যাণে গোটা বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। আর তাই বন্ধুত্ব ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশে। এখন ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কোনো দেশের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করা যায় অনায়াসে।

নয়া শতাব্দী/এসইউ

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ