ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কালো টাকার বিষয়ে খবরের শিরোনামে আপত্তি অর্থ মন্ত্রণালয়ের

প্রকাশনার সময়: ১৬ জুন ২০২২, ১৭:৪৪

কালো টাকার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বক্তব্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম নিয়ে আপত্তি তুলে বিবৃতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ‘অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তি এড়িয়ে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ’ শিরোনামের বিবৃতিতে অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, সংবাদ শিরোনামকে ‘অতি আকর্ষণীয় করার তাগিদে’ কিছু অনলাইন নিউজপোর্টাল ও দৈনিক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের অংশবিশেষ ‘ঢাকায় যাদের জমি ও ফ্ল্যাট আছে সবাই কালো টাকার মালিক’ ব্যবহার করায় ‘অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তি’ সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে বুধবার (১৫ জুন) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে কালো টাকা সাদা করার প্রসঙ্গে বলেন অর্থমন্ত্রী।

বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নিয়ে চাপে আছেন কি না- এ প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি চাপে নাই, কোনোভাবেই চাপে নাই। যেটা বলেছি, সেটা অবশ্যই করব। আমার সম্পর্কে আপনারা জানেন।

সরকারি বিভিন্ন পদ্ধতিগত সমস্যার কারণে মানুষের টাকা ‘কালো টাকায়’ বা অপ্রদর্শিত অর্থে পরিণত হয় মন্তব্য করে তিনি বলেছিলেন, ঢাকায় যাদেরই জায়গা-জমি আছে, বাড়িঘর আছে, ফ্ল্যাট আছে, সবাই কালো টাকার মালিক। একজনও বাকি নাই। কারণ, এরজন্য সরকার দায়ী, এরজন্য সিস্টেম দায়ী।

এর একদিন পর ‘অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তি এড়িয়ে সংবাদ প্রকাশের অনুরোধ’ শিরোনামের বিবৃতি দেওয়া হয়। এতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে মন্ত্রীর ওই বক্তব্যের বিষয়টি স্বীকার করা হলেও আপত্তি জানানো হয়েছে গণমাধ্যমে আসা সংবাদের শিরোনাম নিয়ে।

সেখানে বলা হয়, পুরো সংবাদটি যদি কেউ না পড়ে, তাহলে এ ধরনের শিরোনাম ভুল বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। তাই প্রকৃত বক্তব্যটি খেয়াল করে প্রকৃত বার্তাটি পৌঁছে দিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বিভ্রান্তি সৃষ্টি থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী তার ওই বক্তব্যে আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে। সেখানে বলা হয়, সাংবাদিকদের একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘রাজধানীর গুলশান এলাকায় জমির যে দাম দেখিয়ে নিবন্ধন করা হয়, জমির প্রকৃত দাম তার চেয়েও বেশি। কিন্তু বেশি দামে তো নিবন্ধন করানো যায় না, প্রতিটি মৌজার জন্য দাম ঠিক করে দেওয়া আছে, এর বেশি দামে নিবন্ধন করা যাবে না। সুতরাং কালো টাকা তো সেখানেই সৃষ্টি হচ্ছে; কে কালো টাকার বাইরে আছে?’

একই প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, হয়ত যে ফ্ল্যাট দুই কোটি টাকায় নিবন্ধিত হচ্ছে, সেই ফ্ল্যাটের প্রকৃত দাম হয়ত ১০ কোটি টাকা। ফলে সরকার বাড়তি নিবন্ধন মাশুল পাচ্ছে না। এখানেই কালো টাকা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়গুলো সবাইকে বুঝতে হবে। ঢাকা শহরে যার জায়গা আছে কিংবা যে ব্যক্তি জায়গা কিনেছেন, শুধু তিনিই বলতে পারবেন, কত টাকায় নিবন্ধন হয়েছে এবং জমির প্রকৃত বাজারদর কত। সুতরাং ঢাকা শহরে যাদের জমি বা ফ্ল্যাট আছে, তারা সবাই এক অর্থে কালো টাকার মালিক। তবে এ পরিস্থিতির জন্য আমাদের বিদ্যমান সিস্টেম বা ব্যবস্থা দায়ী।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ