অবৈধ সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাজা ভোগের জন্য আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২২ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাজী সেলিমকে কারাগারে নেওয়া হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) সুভাষ কুমার ঘোষ নিশ্চিত করেছেন।
কারাগার সূত্র জানায়, আদালত থেকে তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানটি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান গেটে ৫টা ৪৫ মিনিটে পৌঁছে। পরে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ভিআইপি ডিভিশন দেওয়া হয়।
এর আগে বিকেলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম হাজী সেলিমের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়া ও চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
কারা গেটে পৌঁছালে হাজী সেলিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পরে তাকে ডিভিশন দিয়ে ভিআইপি সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে হাজী সেলিম প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ভিআইপি ডিভিশন দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, শারীরিক অবস্থার কারণে ও সংসদ সদস্য হওয়ায় তিনি কারাগারে ১ম শ্রেণির মর্যাদা পাবেন। এছাড়া উন্নতমানের হাসপাতালে তার বেটার ট্রিটমেন্টের (সুচিকিৎসা) ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
রোববার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে ঢাকা-৭ আসনের আলোচিত এই সংসদ সদস্য আদালতে যান। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন হাজী সেলিম।
বিকেল ৩টা ১৯ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এরপর আসামিকে কাঠগড়ায় উঠতে বলেন। ৩টা ২৩ মিনিটে কাঠগড়ায় ওঠেন হাজী সেলিম। এরপর তার আইনজীবী সাইদ আহম্মেদ রাজা জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শেষে আদালতের বিচারক শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এছাড়া কারাগারে উন্নত চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণির ডিভিশন চেয়েও শুনানি করেন আইনজীবী। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল তার জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে কারাবিধি অনুসারে কারাগারে উন্নত চিকিৎসা ও প্রথম শ্রেণির ডিভিশন দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
বিকেল ৩টা ৩৬ মিনিটে কাঠগড়া থেকে নেমে এজলাসে বসেন হাজী সেলিম। এ সময় হাজী সেলিম অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং আদালত চত্বরেই শুয়ে পড়েন।
বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন, যেহেতু আসামি দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত, সেহেতু আসামিকে জামিন প্রদান সঙ্গত মনে করি না। ফলে আসামির জামিনের প্রার্থনা নামঞ্জুর করা হলো। সাজা ভোগের নিমিত্তে সাজা পরোয়ানা মূলে আসামিকে কারাগারে প্রেরণ করা হোক।
এরপর বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে আদালত থেকে পিকআপ ভ্যানে করে তাকে নিয়ে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় পুলিশ।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ